অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দিনাজপুরে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ব্যাংক কমকর্তাসহ দুই জন গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ১টায় নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতারদের হাজির করা হয়।
গ্রেফতার দুই জন- ডাচ বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকের জুনিয়র চ্যানেল কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার বাগপুর গ্রামের মৃত তবিজুল ইসলামের ছেলে বরকত জামান (৩৫) এবং দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার রাজারামপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৩৮)। রেজাউল পেশায় বিকাশ ব্যবসায়ী।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ১১ নভেম্বর রাতে ফুলবাড়ী বাস স্ট্যান্ডে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের সিডিএম (গ্রাহক জমা মেশিন) মেশিন চুরি হয়। মেশিনের ভেতর ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বুথের গার্ডকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে দেওয়া হয় এবং মেশিনের তালা খুলে রাখা হয়। এ ঘটনায় ১২ নভেম্বর ডাচ বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার অপূর্ব রায় বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালায় এবং ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকের জুনিয়র চ্যানেল কর্মকর্তা বরকত জামানের বক্তব্য অসামঞ্জস্য ও অসংলগ্ন হওয়ায় পুলিশ তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রেজাউলকে চুরি যাওয়া টাকাসহ আটক করে পুলিশ। পরে রেজাউল ইসলামও নিজের দোষ স্বীকার করে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, গত ছয় মাস আগে ফাস্ট ট্র্যাকের জুনিয়র চ্যানেল ম্যানেজার বরকত জামানের সঙ্গে রেজাউলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে রেজাউল প্রায়ই ফাস্ট ট্র্যাকের চ্যানেল ম্যানেজার বরকত জামানের কাছে আসতেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফাস্ট ট্র্যাক থেকে অর্থ চুরির পরিকল্পনা করেন এবং এক পর্যায়ে গত ১১ নভেম্বর চুরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। তারা দিনের বেলা সুযোগ বুঝে ডিভিআর মেশিন খুলে সিসি ক্যামেরা অকেজো করে সিডিএম মেশিন থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা অপসারণ করতে থাকেন। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বরকত জামান গার্ডকে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ান ও কৌশলে তালা খুলে রেখে যান, যেন সংশ্লিষ্ট সবাই সন্দেহের আওতায় আসে। অভিযানে ব্যাংকের চুরি যাওয়া ডিভিআর মেশিনসহ নগদ ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা ও চার লাখ টাকার ফলস (ভুয়া) ডিপোজিট স্লিপের পাশাপাশি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত আটটি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করার পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার।
Leave a Reply