অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দিনাজপুরে সন্তান হত্যার দায়ে সাদিয়া আক্তার আশা (২৫) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক যাবিদ হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
সাদিয়া আক্তার আশা পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর (ভাটিপাড়া) গ্রামের এরশাদ আলীর স্ত্রী। রায় ঘোষণাকালে তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এরশাদ আলী কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকতেন। মেয়ে মাইমুনাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি হরিরামপুরে থাকতেন সাদিয়া। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই রাত ১১টায় বাড়ির সবাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে তিনি শাশুড়ি রেজিয়া খাতুনকে নফল রোজা রাখার জন্য ভোরে ডেকে দিতে বলেন। ভোরে শাশুড়ি ঘুম থেকে ওঠে তাকে ডাকতে যান। দরজা খোলা পেয়ে ঘরে ঢুকে রেজিয়া দেখেন, সাদিয়া ও তার মেয়ে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে তার চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা ঘরে এসে শিশু মাইমুনাকে মৃত অবস্থায় পান। বাঁ ও ডান পায়ের কবজিতে রক্তাক্ত অবস্থায় সাদিয়াকে অচেতন পড়ে থাকতে দেখেন। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসার পর জ্ঞান ফিরলে পরিবারের কাছে স্বীকার করেন, মেয়ে মাইমুনাকে নিজেই শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় সাদিয়ার দেবর ইব্রাহিম আলী বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই পার্বতীপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ সাদিয়াকে গ্রেফতার করলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রবিউল ইসলাম রবি জানান, মামলার পর আদালতে চার্জ গঠন হয়। আসামি আদালতে বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর ওপর অভিমান করে শিশুকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
Leave a Reply