অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজধানীর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী জুয়েল শিকদার। পুরাতন প্লাস্টিকের পণ্য কিনে রিসাইকল করে বিক্রি করতেন। আর সেই প্লাস্টিকের পণ্য বিক্রির নামে ফাঁদে ফেলে জুয়েল ও তার কর্মচারী মোর্শেদকে বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা হাতিয়ে নিয়ে হত্যা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেন অপহরণকারীরা।
এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদী থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারি বিভাগ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার বিজয় বিপ্লব তালুকদার।
বিজয় বিপ্লব বলেন, ‘জুয়েল সিকদার রাজধানীর চকবাজারের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী। তার পূর্ব পরিচিত দেলোয়ার হোসেন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি তাকে অল্পদামে প্লাস্টিকের কাচামাল কেনার প্রস্তাব দেয়। ব্যবসায়ী জুয়েল ও তার কর্মচারী গত ১৪ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার উলানিয়া ঘাটে যায়। সেখানে কথিত ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান, আজিজ ও হাফিজ নামে এক মাঝি একটি ট্রলারে করে তাদের মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়। পরে তাদের চোখে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে জুয়েলের সঙ্গে থাকা পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন দেলোয়ার। এরপর জুয়েল ও তার কর্মচারী নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাদের লাশ মেঘনা নদীতে ফেলে পালিয়ে যায়।’
বিজয় বিপ্লব তালুকদার বলেন, ‘এঘটনায় তিনদিন পর বরিশালের মুলাদি ও ইলিশায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জুয়েল ও তার কর্মচারী মোরশেদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের বাবা ডিএমপি চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।’
পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবসায়ী জুয়েল শিকদার ও তার কর্মচারী মোর্শেদ আলম হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে বরিশালের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল- নুরুজ্জামান হাওলাদার, মো. আ. আজিজ শিকদার, হাফেজ চৌকিদার ও দেলোয়ার হোসেন মোল্লা ওরফে দেলু।
এ সময় তাদের কাছ থেকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘অপহরণকারীরা পরস্পরের যোগসাজশে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জুয়েল ও তার কর্মচারীকে অপহরণ করে উলানিয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃতরা মরিচের গুড়া দিয়ে গলা চেপে তাদের নিস্তেজ করে। পরে জুয়েলের সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে তাদের মেঘনা নদীতে ফেলে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।’
এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। তারা এর আগে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে। তাদের রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Leave a Reply