অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গুড়দাহ বাজারে কর্ণফুলি প্রাইভেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় জিরিন আক্তার ইভা নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে প্রশাসন হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়।
জানা যায়, উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের আমিনুর রহমানের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী জিরিন আক্তার ইভা গত ৪ মার্চ শনিবার রাতে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই ডা. আনিচুর রহমান তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। ভুল চিকিৎসায় রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
হাসপাতালের মালিক ডাব্লু জানান, রোগীর অ্যাজমার সমস্যা ছিল, সিজার করার পর তার অবস্থা খারাপ দেখে যশোর নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়। তার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হেদায়েত মাহমুদ সেতু বলেন, গুড়দাহ বাজারে একটি কর্ণফুলি প্রাইভেট হাসপাতাল রয়েছে। উক্ত হাসপাতালে গত শনিবার ভূল চিকিৎসায় এ প্রসূতি মারা যায়। বিষয়টি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনকে জানালে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। ডা. হেদায়েত মাহমুদ সেতু ঘটনাস্থলে যেয়ে তার বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকায় তিনি হাসপাতাল বন্ধ করে দেন।
তিনি আরো বলেন, হাসপাতালটি এর আগেও সরকারিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আদেশ অমান্য করে এটি চলমান ছিল। রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে আপস-মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, মহেশপুর উপজেলায় আরও কমপক্ষে ২০টি লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও হাসপাতাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি চক্র ও মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি চক্রের সাথে মাসিক লেনদেনের মাধ্যমে চালু রয়েছে। যখন কোন রোগী অপচিকিৎসায় মারা যায় তখন কর্তৃপক্ষ নামধারী চক্রটি সাধারণ জনগণের আইওয়াশ করতে সংশ্লিষ্ট প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে আবার তা চালু করতে সহযোগীতা করে। এভাবেই চলে আসছে যুগের পর যুগ। গণমাধ্যমে এ নিয়ে বার বার সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন ফল হয় না।
এবিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঝিনাইদহের বর্তমান সিভিল সার্জন মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে।
Leave a Reply