October 3, 2025, 12:56 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সংবাদিকদের সাথে বিএনপির প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার কাজলের মতবিনিময় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে দেশে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না : অর্থ উপদেষ্টা গাজা অভিমুখি জাহাজ ‘কনসায়েন্স’ থেকে বাংলাদেশী আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বার্তা শাপলার পরিবর্তে এনসিপিকে থালা-খাট-বেগুনসহ ৫০ প্রতীকের অপশন দিলো ইসি গাইবান্ধায় এক হাজার টাকার জন্য বৃদ্ধের ঘরের টিন খুলে নিল পাষন্ড পাওনাদার ১২০ টাকা খরচ করে পুলিশে চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০ তরুণ টেকনাফের গহীন পাহাড়ে পাচারের জন্য আটকে রাখা ২১ জনকে উদ্ধার চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে বাসচাপায় শিশুসহ দুইজন নিহত গাজাগামী ত্রাণবহরে বাধা দেওয়ায় ইসরাইলি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করলো কলম্বিয়া ইসরাইলি অবরোধ উপেক্ষা করে গাজা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে মানবিক ত্রাণ বহনকারী নৌবহর ফ্লোটিলা
এইমাত্রপাওয়াঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সংবাদিকের সাথে বিএনপির প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার কাজলের মতবিনিময়

বৈশ্বিক অর্থনীতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সহজ শর্তে ঋণ প্রদানে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উন্নয়ন অংশীদারদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘বৈশ্বিক অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত সহজ শর্তে অর্থায়ন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং উন্নত দেশগুলোকে এ বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে আরও বলেন, ‘আমরা কারো কাছে করুণা বা দয়া চাই না, আমরা ন্যায্য অধিকার চাই। বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের অংশীদার হিসেবে আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যাই দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সরকার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আজ সকালে যৌথভাবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ অনুষ্ঠানের আায়োজন করে।
সরকার প্রধান বলেন, এই সঙ্কটময় মুহুর্তে আমরা হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি অনেক উন্নয়ন অংশীদার সুদের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে যা বেশিরভাগ প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন-অর্থায়নকে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর করে তুলছে। তাই একাধিক অর্থনৈতিক ধাক্কার প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বৈশ্বিক ব্যবসায়িক অংশীদারগণ অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বিধি-নিষেধ আরোপ করছে যা সার্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমাদেরকে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমি দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, আইসিটি-ভিত্তিক উদ্যোক্তা, মানসম্পন্ন অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের উপর কৌশলগত গুরুত্বারোপসহ অর্থায়নের নমনীয় পদ্ধতি এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের জন্য এডিবি’র প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিনিয়োগ-বান্ধব ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন,  আমরা এই ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কটের শিকার হলেও এর জন্য আমরা মোটেও দায়ী নই। বরং এটি কষ্টার্জিত অর্জনগুলোকেই নস্যাৎ করছে এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আমাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা সত্যিই এই সঙ্কটের কোনো তাৎক্ষণিক সমাধান দেখতে পাচ্ছি না। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষকরে নিম্ন আয়ের মানুষ আরো কষ্ট পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ দেশই খাদ্য, জ্বালানি এবং আর্থিকভাবে মারাত্মক সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে। এরফলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবক্ষয় এবং মুদ্রাস্ফীতি আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হল, এগুলো বিশ্ব সম্প্রদায়ের দরিদ্রতম অংশকেই অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।
সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং।
বাংলাদেশ-এডিবি সম্পর্ক কীভাবে বিকশিত হয়েছে এবং ৫০ বছরে ও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ কীভাবে এগিয়ে গেছে তার ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে স্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবেলায় এডিবি ২ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা দিয়েছে। আমি এই সহায়তা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। সম্প্রতি এডিবি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রলঙ্করী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ২৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের জরুরি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। এছাড়াও এডিবি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনে স্বল্প-সুদে অর্থায়ন করছে।
তিনি বলেন, “আমরা অত্যন্ত সন্তেুাষেরে সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, দুঃসময়ে এডিবি উদ্ভাবনী অর্থায়ন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে সব সময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে।”
গত ৫০ বছর ধরে এডিবি আমাদের সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বেই প্রথম এডিবির সাথে আমাদের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ৫০ বছরে আমাদের আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রায় সকল খাতে তাদের সহায়তা রয়েছে। তিনি এজন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এডিবিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশে এডিবির সহায়তা প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে তাদের সহযোগিতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এডিবি’র ক্রমবর্ধমান অবদান দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। যা এডিবি’র পোর্টফোলিওতে বাংলাদেশকে তৃতীয় বৃহত্তম গ্রাহক করে তুলেছে।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে এডিবি’র আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় ৫৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার (সাসেক) অধীনে এডিবি-অর্থায়নকৃত আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সংযোগ প্রকল্পগুলো অশুল্ক বাঁধা হ্রাস করে পণ্য ও পরিষেবায় আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
গত দেড় দশকে বাংলাদেশ উন্নয়নের অভাবনীয় যাত্রার সাক্ষী হয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা এই সময় ৬ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি। দারিদ্র্য হ্রাস, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস, সাক্ষরতার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং লিঙ্গ সমতা অর্জনের ক্ষেত্রেও আমরা অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। আমরা কোভিড-১৯ মহামারিকেও সফলভাবে মোকাবেলা করেছি। আমাদের এই উন্নয়ন প্রচেষ্টা বিশ্ব সম্প্রদায় দ্বারা স্বীকৃত।

তিনি বলেন, আগামী বছরের মধ্যে আমরা দেড় ট্রিলিয়ন অর্থনীতির মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছি। বর্তমান জিডিপির আকারে বাংলাদেশ বিশে^র ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। ধারাবাহিকভাবে এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে ২৮ এবং ২০৩৬ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পেরেছে। উল্লেখযোগ্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। পদ্মা সেতু নির্মাণ ছিল আমাদের জন্য গৌরব, মর্যাদা ও যোগ্যতার প্রতীক, যা বাংলাদেশ পারে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ৫ বছরের প্রস্তুতিমূলক সময়সহ এলডিসি থেকে আমাদের উত্তরণ অনুমোদন করেছে। আমরা এখন একটি মসৃণ এবং টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে কাজ করছি।  আমরা চট করে কোথাও লাফ দিয়ে পড়িনি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধাপে ধাপে আমাদের উত্তরণ ঘটাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আশু লক্ষ্য হল ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করা। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, জ্ঞানভিত্তিক এবং স্মার্ট দেশ হিসেবেই বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমরা অন্তত বাস্তবমুখি ও সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সফলভাবে আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে বাংলাাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page