অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজধানীর কলাবাগানের একটি বাসা থেকে কুদরত-ই খোদা হৃদয় (২৪) নামে এক সাংবাদিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুর ১২টার দিকে কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের ৯৫ নম্বর বাড়ির ছাদের পাশে রুম থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায়। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর এলাকার আরিফ আহমেদ মিঠুর ছেলে হৃদয়। বর্তমানে কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের ৯৫ নম্বর বাড়ির ছাদের পাশে রুমটিতে একাই থাকতেন।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মঞ্জুরুল ইসলাম সজীব উল্লেখ করেন, ছাদের রুমটিতে শায়িত অবস্থা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। হৃদয়ের গলার বাম পাশে অর্ধচন্দ্রাকৃতির কালো দাগ আছে। তিনি ফ্যানের সাথে কাপড় পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
এদিকে, মর্গে মৃত হৃদয়ের মামা ফেরদৌস হাসান বলেন, ‘প্রত্যাশা নামে এক মেয়ের সাথে তার সম্পর্ক ছিল জানতাম। গতকাল সোমবার রাতে হৃদয় তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সে সময় প্রত্যাশাকে নিয়ে অনেক হতাশার কথা মায়ের কাছে বলে। মা তাকে বিভিন্নভাবে শান্তনা দেন।’
মামা ফেরদৌস জানান, সকালে প্রত্যাশা নিজেই হৃদয়ের ফোন থেকে হৃদয়ের মাকে ফোন দিয়ে জানায় হৃদয় আর নেই। তবে বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেননি তারা। পরবর্তিতে বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হন, হৃদয় মারা গেছেন।
আজ ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত প্রত্যাশা বেশ কয়েকবার হৃদয়ের বাসায় যান এবং আবার বেরিয়ে আসেন। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সবশেষ সকাল ৯টার দিকে প্রত্যাশা হৃদয়ের মৃত্যু খবর দেন তাদের।
মৃত হৃদয়ের সহপাঠী নিলয় বিশ্বাস জানান, ২০১৮ সালে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে জার্নালিজম বিভাগে ভর্তি হন হৃদয়। ২০২১ সালে অনার্স শেষ করার পর মাস্টর্সে ভর্তি হন। এরপরই যমুনা টিভির মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। মেহজাবিন প্রত্যাশা নামে এক মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি হৃদয়ের পরিবারও জানতো। হৃদয়ের বাসায় যাতায়াত ছিল প্রত্যাশার।
তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হৃদয় তার একটি গ্রুপে হতাশামূলক কিছু কথা লেখেন। তবে রাতে সেটি কেউ খেয়াল করেনি। সকালে তার মৃত্যুর খবর শুনতে পান। মানসিক কোনো চাপ থেকেই হৃদয় আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা তাদের।
এরআগে রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের বাসা থেকে পুলিশ হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, মৃতদেহ উদ্ধারের সময় হৃদয়ের এক মেয়ে বন্ধু সেখানে ছিলেন। তিনি জানিয়েছে, হৃদয় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন তারা।
কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আহমেদ জানিয়েছেন, এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিকের এক বান্ধবীকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Leave a Reply