অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল সেচ মৌসুম। ইরি-বোরো ধান উৎপাদনের উপযুক্ত সময়। এসময়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কৃষি উৎপাদনে সহযোগিতা করতে সেচকাজে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের গুরুত্ব থাকে অপরিসীম। কিন্তু নানা সমস্যায় চাহিদার প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সব সময় নির্বিঘ্নভাবে পাওয়া যাবে কিনা এমন সংশয় থেকেই বিকল্প পন্থায় ভাবতে শুরু করে দেশের কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
তাদের ভাবনায় আসে কিভাবে কৃষি জমিতে সৌরশক্তির মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানো যায়। ওই লক্ষ্যেই সৌরচালিত পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে দুই হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ভূ-উপরিস্থ পানিনির্ভর সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ শুরু করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এর ফলে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১১ হাজার টন খাদ্যশস্য ও শাকসবজি উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে উপকার পাচ্ছেন প্রায় হবে ৬ হাজার ৬০০ কৃষক পরিবার।
বর্তমানে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ এবং ডিজেল ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেয়া হয়। এর ফলে সময় মত সেচ ব্যবস্থার কারণে দুই ফসলি জমি এখন তিন ফসলিতে পরিণত হচ্ছে। খরচ কম ও ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। পর্যায়ক্রমে দেশের সব ডিজেল বা বিদ্যুৎ পাম্প সৌর শক্তিতে রুপান্তরে কাজ করবে কৃষি বিভাগ। দেশের উত্তরের বিশাল কৃষি এলাকায় দিন দিন তাই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এ পদ্ধতি।
সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নাটোরের বিস্তীর্ণ চলনবিল ও হালতি বিলসহ দেশের ছোট-বড় নদ-নদীর পানি দিয়ে, নিরবচ্ছিন্ন সেচ দিয়ে অধিক ফসল পেতে শুরু করেছেন কৃষকরা। পরীক্ষামুলকভাবে দেশের ৩৪ জেলার ১৪১টি উপজেলায় ২৫০টি সোলার সেচ পাম্পের মাধ্যমে, সেচ প্রদান কার্যক্রম চালু থাকায় বদলে গেছে বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষির চিত্র।
স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকরা বলছেন, এ পদ্ধতিতে সময়মত চাষাবাদ করতে পারায়,বন্যার আগেই ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে। বৃষ্টির অপেক্ষায় না থেকে, বীজ বপন হচ্ছে সময় মত। ফলে, দুই ফসলি জমি এখন তিন ফসলি জমিতে রুপান্তর হয়েছে। সৌর সেচপাম্পের সাহায্যে আবাদে পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করেও আগের চেয়ে তিন ভাগের একভাগ খরচে অধিক ফলন ও লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
ঢাকা কৃষি অধিদপ্তর বিএডিসির পরিচালক মোঃ সারওয়ার হোসেন বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশের সব ডিজেল পাম্প, সৌর শক্তি ব্যবহারের আওতায় আনতে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ফসলে সেচ প্রদান সফল হওয়ায় এবার এ প্রকল্পের মাধ্যমেই নেট মিটার যুক্ত করে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার আশাও করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply