অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দক্ষতাহীন অতিরিক্ত গ্র্যাজুয়েট অর্থনীতিতে যুক্ত করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, দক্ষতাহীন অতিরিক্ত গ্র্যাজুয়েট শুধু চাকরির জন্যই নয়, এটি সমাজের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ।
বুধবার (১৪ জুন) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যুব সমাজকে দক্ষতা উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের সামনে এখন প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাইলফলক হাতছানি দিচ্ছে। প্রযুক্তিগত সেবা সহজীকরণ, আধুনিক নাগরিকের ধারণা বাস্তবায়ন এবং সমাজের সর্বক্ষেত্রে যথাসম্ভব ঝামেলহীনভাবে ফিচার স্থাপনের জন্য বাংলাদেশে লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে কারিগরি ও বৃত্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতেই হবে, সক্ষমতা বৃদ্ধি করতেই হবে।’
তরুণ সমাজ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার বদলে সাধারণ শিক্ষার দিকে এখনও বেশি মনযোগী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি কৃষি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। যার ফলে আমাদের কর্মদাতাদের অভিযোগ, তারা প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ কর্মী পাচ্ছেন না। এই অভিযোগ সত্য। একই সঙ্গে এও সত্য যে তরুণরা তাদের শিক্ষা জীবন শেষে কাজ পাচ্ছেন না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গ্র্যাজুয়েটদের একটি বড় সংখ্যাই কর্মদক্ষতাহীনভাবে কর্মজগতে প্রবেশ করছে। তাই তাদের দক্ষতা ও কারিগরিতে শিক্ষার্থী ভর্তি আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘তরুণরা যখন দক্ষতাহীনভাবে গ্র্যাজুয়েট হচ্ছেন, তখন চাকরি না পেয়ে বিভিন্ন রকম হতাশা, অস্থিরতা, বিভিন্ন রকম আশক্তি তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। এটি নিশ্চয়ই কোনও সমাজের জন্য সুখকর নয়। এটি যে কোনও সমাজের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা কাজ করছি শিক্ষার্থীদের এবং একইসঙ্গে সমাজের মানসিকতা বদলাতে। আমাদের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। আমরা জানাতে চাই আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা। এটাকে সুলভ করার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায় যারা আছেন তাদেরও কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার সঙ্গে পরিচিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ৬৪০টি সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে যুক্ত করেছি।’
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ধরনের শিক্ষায় শিক্ষকের দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে। দক্ষতা অর্জন কারিগরি শিক্ষার মূল লক্ষ্য। আমরা রাতারাতি এই শিক্ষার মান উন্নয়ন করে ফেলতে পারবো না। তবে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় দেশব্যাপী কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং যুগোপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১০ বছরে কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্টের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে কারিগরিতে এনরোলমেন্ট ২৫ শতাংশ করতে বিভিন্ন প্রকল্প আমরা গ্রহণ করেছি। কারিগরিতে নারী শিক্ষার হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নাফরিন আফরোজ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মোহসীন।
Leave a Reply