অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওড় থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রেফতার ৩৪ শিক্ষার্থীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে তাহিরপুর থানার এসআই রাশেদুল কবির বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। বিকালে সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে রবিবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাহিরপুর উপজেলার ১ নম্বর শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের দুধের আউটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে টাঙ্গুয়ার হাওরের পাটলাই নদীর পাড়ে অবস্থান করা ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মেধাবী ছাত্র। তারা তাহিরপুর উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি ইসলামি ছাত্র শিবিরের বুয়েটের বায়তুল মাল সম্পাদক (কোষাধ্যক্ষ) আফিফ আনোয়ারের নেতৃত্বে নৌকায় গোপন সাংগঠনিক বৈঠক করছিলেন। তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার পাঁয়তারা করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের আটক করে তাহিরপুর থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, হাওরে ঘুরতে আসা যুবকরা বুয়েটের বর্তমান ও সাবেক ছাত্র। তারা সবাই ইসলামি ছাত্রশিবিরের কর্মী, সাথী, সমর্থক। ঘোরাঘুরির পাশাপাশি তারা সাংগঠনিক বৈঠক করেন নৌকায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, ইসলামি ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের নিয়ে হাওরে একটি নৌকায় ঘোরাঘুরির নামে গোপন বৈঠক ও দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে নাশকতার সৃষ্টির লক্ষ্যে একত্র হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় ৩৪ জনকে আটক করে তাহিরপুর এনে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ আটকদের তল্লাশি করে ৩৩টি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল, ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কার্যক্রম সংক্রান্ত কপি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কল্যাণ তহবিল সংক্রান্ত প্রচারপত্র, সদস্য, সাথীদের পাঠযোগ্য কোরআন ও হাদিসের সিলেবাস, কর্মী ঘোষণা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কাগজপত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাহিরপুর থানার এসআই রাশেদুল কবির বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বুয়েটের বর্তমান ছাত্র ২৪ জন, সাবেক ছাত্র ৭ জন ও বাকি ৩ জন ঢাকার অন্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।
এদিকে টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসা গ্রেফতারকৃত বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে গোয়েন্দা সংস্থা।
একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে কাজ করছে একাধিক আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। গ্রেফতারকৃতদের বর্তমান ও গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় তাদের কর্মকাণ্ডের বিশদ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ করার না করার শর্তে তিনি বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী। তারা নাশকতা উপাদান তৈরিতে এক্সপার্ট। তাদের মগজ ধোলাই করে শিবিরের কর্মীরা দলে ভিড়িয়ে নাশকতার কাজ চালায়। অতীতেও দেখা গেছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বড় বড় নাশকতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। এজন্য তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইতিহাস ও বর্তমান কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
Leave a Reply