অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরাইল বিরোধী যুদ্ধে ফিলিস্তিনি ও লেবাননি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবিচলতার ভূয়সী প্রশংসা করে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের জন্য আরেকটি অপমানকর পরাজয় অপেক্ষা করছে।
হিজবুল্লাহর শহীদ দিবস উপলক্ষে গতকাল (শনিবার) বৈরুতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ কথা বলেন সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ। তিনি বলেন, “ইসরাইলের সময় ভালো যাচ্ছে না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দিদের মুক্ত করার জন্য তেল আবিবের ওপর চাপ বাড়ছে। আমাদেরকে ওই চাপ অব্যাহত রাখতে হবে; তবে এক্ষেত্রে মূল বোঝাটি বহন করতে হবে গাজাবাসীকে।”
সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ বলেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় শত্রু সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। গত ৩ নভেম্বর তার আগের ভাষণের পর থেকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান হিজবুল্লাহ নেতা। গত এক সপ্তাহে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলার মাত্রা ও পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি ঘোষণা করেন।
সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, “আমরা লেবাননের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুদ্ধ ড্রোন ব্যবহার করছি। এছাড়া আমরা হেভি-ক্যালিবারের বুরকান (আগ্নেয়গিরি) ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে হামলা করছি যা ৫০০ কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে।”
হিজবুল্লাহর রকেট
৭ অক্টোবর গাজার ওপর ইসরাইলি আগ্রসন শুরু হওয়ার পর থেকে নিজের দ্বিতীয় ভাষণে হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, “ইহুদিবাদীরা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের ক্ষয়ক্ষতি ঢেকে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ পেয়ে যাচ্ছি। আমরা ইসরাইলের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা ড্রোন পাঠাচ্ছি যেগুলো হাইফা বা তার চেয়েও দূরে পৌঁছে আমাদেরকে তথ্য ও ছবি পাঠাচ্ছে।”
তিনি বলেন, গাজা আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য লেবানন ফ্রন্ট থেকে ইসরাইলের ওপর প্রতিনিয়ত চাপ বাড়তে থাকবে।
সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনী গাজায় ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের মাতৃভূমির স্বপ্ন ভুলিয়ে দিতে চায়। তারা আরো চায়, লেবাননবাসী পায়ের উপর পা তুলে গাজায় তাদের ধ্বংসযজ্ঞ চেয়ে চেয়ে দেখুক। কিন্তু তা আর হবার নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
হিজবুল্লাহ নেতা বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে গণহত্যা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরত রাখতে পারেনি তেল আবিব। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে দক্ষিণ লেবাননে আগ্রাসন চালিয়ে ইসরাইলিরা হাজার হাজার ঘর বাড়ি ধ্বংস এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। ২০০৬ সালেও তারা হাজার হাজার লেবাননিকে হত্যা করেছে। কিন্তু তাতে লেবাননের জনগণ তাদের প্রতিরোধ বন্ধ করে দেয়নি। বর্তমান প্রতিরোধ যুদ্ধেও গাজাবাসী ফিলিস্তিনিরা জয়ী হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
Leave a Reply