অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগ দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শনিবার (২২ জুন) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ একাধিক টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেন।
জানা গেছে, বাঘার পৌরমেয়র আক্কাস আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১০টায় বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। অপরদিকে ঠিক একই সময়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের আধিপত্য বিস্তার, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দলিল প্রতি অতিরিক্ত ফ্রি আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা করেন আক্কাস আলী ও তার সমার্থকরা। উপজেলা চত্বরের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মাথায় বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী, তার ভাগনা পাকুড়িয়া (ইউপি চেয়ারম্যান) মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মোকাদ্দেস ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম মুক্তার নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত ক্যাডার বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লোহার পাইপ, ইট এবং পাথরের টুকরা নিয়ে ঐ মানববন্ধনে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুর ইসলাম বাবুল। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন আড়ানী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (রফিক), ফিরোজ আহাম্মেদ, ইস্তেয়ার হোসেন, শাহাদত হোসেন, মাসুদ রানা, জয়, কামাল হোসেন, উজ্জল, আব্দুল খালেক, জারমান আলী ও শফিউর রহমান শফিসহ প্রায় ২৫ জন। এর মধ্যে আক্কাস গ্রুপের আহত হয়েছেন পাঁচজন।
এদিকে ঘটনার পর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিককে গুরুত্ব আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে ১২ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সঞ্জয় কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যর প্রতিপক্ষ বাঘা পৌরমেয়র আক্কাস আলী সমর্থীত প্রার্থী আইনজীবী লায়েব উদ্দিন লাভলু ১০৬ ভোটে জয় লাভের পর নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা থেকে শুরু করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সর্বশেষ বাঘা দলিল লেখক সমিতির আধিপত্যা বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ১০ জুন দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। অতঃপর শনিবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আক্কাছ আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ডাক দিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বাঘা থানা ওসি (তদন্ত) সোহেব খান জানান, আমরা দু’গ্রুপের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছি। একইসঙ্গে আক্কাস গ্রুপের দুজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। তবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
Leave a Reply