ফারুক আহমেদ, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি : মাগুরায় সেলিম আজাদ (৩৫) নামে এক যুবককে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী সেলিম আজাদ মাগুরা সদর উপজেলার গোপালগ্রাম ইউনিয়নের সংকোচখালী গ্রামের আক্তার বিশ্বাসের ছেলে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সেলিম তার ছোট ভাই হোসাইনকে পুলিশের এসআই পদে চাকরির জন্য পলাশ মাহমুদ ও তার স্ত্রী মনিনুন্নাহার নামে এক দম্পতির খপ্পরে পড়ে মনিনুন্নাহারকে ২৫ লাখ টাকা প্রদান করে। পরে চাকরি ও টাকা কোনটার দেখা পায়নি ভুক্তোভোগী সেলিম ও তার পরিবার। উল্টো চালাকি করে পলাশ মাহমুদ ও তার ভাই রাসেল শেখ যোগসাজশে সেলিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে। সেই মামলায় নড়াইল জেলে রয়েছে সেলিম। পলাশ ও রাসেল নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার হেচলাগাতি গ্রামের মকবুল শেখের ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, পলাশের স্ত্রী মনিনুন্নাহার ভুক্তভোগী সেলিমের এলাকায় একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করে। সেই সুবাদে প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকে পলাশ দম্পতির সাথে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সুযোগ নিয়ে ওই দম্পতি ২০১৯ সালের দিকে পাঁচ বছর আগে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২৫ লাখ টাকা নেয়। পরে চাকরি ও টাকা কোনটাই দিতে পারেনি তারা। টাকা ফেরত চাইলে মুনিনুন্নাহার ২৫ লাখ টাকার অগ্রণী ব্যাংক একাউন্টের একটি চেক প্রদান করে ভুক্তভোগী পরিবারকে। পরে তারা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ১১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে চেকটি ডিজঅনার করে শ্লীপ দেয়। টাকা না পেলে পরে ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারেন পলাশ দম্পতি তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। এই ঘটনায় সেলিম আজাদ বাদী হয়ে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে একটি চেক ডিজঅনার মামলা করেন। মামলা নাম্বার সিআর ৯২০/২০। অগ্রণী ব্যাংকের হিসাব নাম্বার- ০২০০০০৯৮১৫৫৭২ এবং প্রদানকৃত চেক নাম্বার ১১৮১৯৬৭৪০৮০। মামলাটি এখনো মাগুরা আদালতে চলমান রয়েছে।
এবিষয়ে কয়েক বছর অতিবাহিত হবার পরও যখন মিমাংশার টালবাহানা , তখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সেলিমের নামে মামলা করেছে পলাশ ও তার ভাই রাসেল। মামলার বিবরণে বলা হয়েছে সেলিম তাদেরকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বারক দিয়ে ৬ লাখ টাকা নেয়। দুটি মামলার বিবরণে পাওয়া যায়, একই ঘটনায় স্বাক্ষী ও সময় ভিন্ন ভিন্ন তারিখে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ পলাশ ঘটনার দিন হিসেবে উল্লেখ করেছে ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ আর তার ভাই রাসেল উল্লেখ করেছে ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখ। যা দিন ও সময় হিসেবে দুটি মামলাতেই তারিখের অমিল। আবার দুটি মামলার স্বাক্ষী হিসেবে দেওয়া হয়েছে একই ব্যাক্তিদের। সেলিমের স্বাক্ষর জাল করে এই দুটি মামলা সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, পলাশ ও রাসেল যে মামলা করেছে তা ডাহা মিথ্যা ও সাজানো মামলা। সেলিমকে হয়রানি করার জন্য তার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া সাক্ষী বানিয়ে এসব সাজানো মামলায় জড়ানো হয়েছে সেলিমকে। তাই সঠিকভাবে তদন্ত সাপেক্ষে এসব সাজানো ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে সেলিমকে জামিন মঞ্জুর করে তার মুক্তির জোর দাবি করেন। একইসাথে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পলাশ ও মনিনুন্নাহার যে টাকা নিয়েছে সেগুলো ফেরতের জোর দাবি জানান ভুক্তভোগী সেলিমের পরিবার।
এবিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে পলাশ মাহমুদ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি পুরোপুরি ২৫ লাখ টাকা নেননি বলে জানান। তবে কত টাকা নিয়েছেন তা বলেননি। সেলিমের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে মামলা করা হয়েছে। এর বাইরে তিনি আর কোনো তথ্য দেননি এই প্রতিবেদককে।
Leave a Reply