25 Nov 2024, 07:48 am

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ‘বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ (জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) নগরীর বেজা কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন।

তিনি বলেন, দেশের সম্ভাবনাময় এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, পরিকল্পিত শিল্পায়ন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নে বেসরকারি ডেভেলপারের অংশগ্রহণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা।

শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বেজা ২০১৩ সাল থেকে পরিকল্পিত শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির দৃশ্যপট পরিবর্তন করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজের শুভ সূচনা করেন। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চলে কয়েকটি শিল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সর্বশেষ গত ২০ নভেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়লেও বেজা তার উন্নয়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী গত ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে প্রথমবারের মতো চারটি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। যার মধ্যে ছিল ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন স্টিল, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টিকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এরই ধারাবাহিকতায় জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। এরই মধ্যে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প নির্মাণ কাজ শুরু করেছে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সিংগার, চুক্তি সই হয়েছে জার্মান কোম্পানি রুডলফের সঙ্গে’

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, উদ্বোধনের দিনেই (সোমবার) এ জোনে দুটি জাপানিজ বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি সই হতে যাচ্ছে। এছাড়া আরও প্রায় ৩০টি জাপানি এবং অন্যান্য দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। খুব শিগগির বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে এখানে আনুমানিক এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া এখানে প্রাথমিকভাবে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পথ চলা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪ সালে জাপান সফরের মাধ্যমে। ২০১৫ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। ২০১৬ সালে জাইকা বাংলাদেশে একটি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেয় এবং একই বছর জাপান সরকার বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশন ডেভেলপার হিসেবে নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করে। ২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে জাইকা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পক্ষে মত দেন। পরবর্তীসময়ে যৌথ উদ্যোগে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ২০১১ সালে বেজা ও সুমিতমো করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি সই হয়।

হারুন বলেন, বেজা ২০১৯ সালে প্রস্তাবিত এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু করে। জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৫০০ একর ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক, নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। নির্মাণ শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। এ পর্যন্ত কোম্পানির অনুকূলে ১৮০ একর উন্নত জমি বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোনকে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তা শিল্প কারখানা তৈরির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অবশিষ্ট জমি খুব শিগগির হস্তান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড থেকে জানা যায়- এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানিজ বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছে ও প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীরা জোনটি পরিদর্শন করছেন। আমি মনে করি, আগামীতে হাজার হাজার তরুণের ‘স্বপ্নের গন্তব্য’ হবে জাপানিজ জোন ও জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে টেকনোলজি ট্রান্সফারের পথ সুগম হবে।

আগামীকাল জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে তাকসিম এ খানের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এই রিট করেন।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে রিট আবেদনের অনুমতি নেয়া হয়েছে।

সায়েদুল হক সুমন বলেন, ওয়াসার এমডি গত ১৩ বছর ধরে আছেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি আছেন। এসময়ে পানির দাম ৬ টাকা থেকে ১৫ টাকা ইউনিট হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার অভিযোগ বিভিন্ন পত্রিকায় উঠে এসেছে। তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত হচ্ছে, আমি যতটুকু জানি দুদকেও অনুসন্ধান হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যখন তাকে নিয়োগ দেয়া হয়, নিয়োগ পরীক্ষায় নম্বরে ঘষামাজা করে, জাল জালিয়াতি করে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।
ওয়াসার এমডি হতে হলে যে ধরনের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার, সেটা ছিল না। কম করে হলেও ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার, সেটা কিন্তু ছিল না। তারপরও তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, এরপর সেই মেয়াদ আবার বাড়ানো হয়েছে। আমার বক্তব্য হলো দুদককে আমরা পার্টি করেছি। এই কথাগুলো সত্য হলে তার নিয়োগপত্রের তদন্ত হওয়া দরকার।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, তার নিয়োগপত্রে যা লেখা আছে, পৃথিবীর কোনো লোকের নিয়োগপত্রে এমন লেখা থাকে কি না আপনারা দেখবেন। তার নিয়োগপত্রে লেখা হয়েছে ভবিষ্যতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকালে পরীক্ষা ও নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এর মানে বোঝা যাচ্ছে দুই নম্বরি হয়েছে। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। এজন্যই আমরা তার নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়েছি।

ওয়াসার এমডির নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট