অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শীতের শুরু থেকেই শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওড় ও বাইক্কা বিলে উড়ে আসছে অতিথি পাখি। প্রতি বছর শীতের দেশ থেকে পাখিরা উষ্ণতা ও খাদ্যের খোঁজে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে।
বাইক্কা বিলে আসা অতিথি পাখির মধ্যে দেখা গেছে পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, পানমুরগি, বেগুনি কালেম, কালোমাথা কাস্তেচরা, শঙ্খচিল, রাজসরালী, পিনটেল, লেঞ্জাহাঁস, বালিহাঁস, ভুতি হাঁস, পাতি সরালীসহ আরো অনেক প্রজাতির পাখি।
শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওড়ের পূর্বদিকের প্রায় ১০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে জলাভূমির নাম বাইক্কা বিল। সরকারিভাবে এই বিলটিকে মৎস্য সম্পদের একটি অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। এই বিলের আইড়, কই, মেনি, ফলি, পাবদাসহ আরো অনেক প্রজাতির মাছ এখানে বংশবৃদ্ধি করে পুরো হাওড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। শুধু মাছের জন্যেই নয় পরিযায়ী পাখি এবং অন্যান্য অনেক প্রাণীর জন্যও একটি চমৎকার নিরাপদ আবাস।
পর্যটকদের জন্য এটি একটি দৃষ্টিনন্দন জলাভূমি যেখানে সহস্ত্র শাপলা আর পদ্ম ফোটে। এছাড়া এই বিলের বাসিন্দা আর শীতের পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য রয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার!
২০১১ খ্রিষ্টাব্দের এক গবেষণায় বাইক্কা বিলে ২০৩ প্রকার পাখির সন্ধান মিলেছে, যার মধ্যে অতিথি পাখি ১৫৩ এবং স্থায়ী বসবাসকারী পাখি ৫০ প্রকার!
কয়েক বছর ধরে শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিল সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ায় এবছর অতিথি পাখি বেশি আসছে। সরকারিভাবে সংরক্ষিত বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রম ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজ শুরু করার পর পরিবেশের কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। নিরুপদ্রব বাইক্কা বিল এখন অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে আগের চেয়ে আরো বিচিত্র পাখির ঝাঁক ছুটে আসছে।
বাইক্কা বিল ঘুরে দেখা যায়, বিলের সৌন্দর্য বেড়েছে অপরূপ রুপে। নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি নিশ্চিন্তে মেতে উঠেছে জলকেলি আর ডুব সাঁতারে। কখনো তারা উড়ে বেড়াচ্ছে বিলের আকাশ জুড়ে। কেউবা জলের মধ্যে খাবার জোগাড়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে হাওরে এক চমৎকার আবহ বিরাজ করছে। এসব দৃশ্য সহজেই মন কাড়ে আগত দেশি-বিদেশি প্রকৃতি-পাখি প্রেমীদের। এদের অবিরাম খুঁনসুটি, ডানা ঝাপটে দলবেঁধে উড়ে চলা আর ডুব সাঁতার দেখতে ছুটে আসে পর্যটকরা।
জানা যায়, হাওরের পাড়ে দীর্ঘ হিজল-করচের সবুজ বনায়ন, বিলগুলোতে শাপলা-শালুকসহ পর্যাপ্ত খাবার থাকায় এই বিলে অতিথি পাখির আগমন এবার উল্লেখযোগ্য। তবে, এলাকাবাসীর দাবি, পাখি শিকার বন্ধে আরো সচেতনতা ও সাবধানতা বাড়াতে হবে, কাজ করতে হবে এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়েই।
Leave a Reply