অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নেতা খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন কারাগারে সাজাভোগ করছেন। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি। দশ ট্রাক অস্ত্র, ২১শে গ্রেনেড হামলা করে আমাদের হত্যা করতে চেয়েছিল। ওইদিন আইভি রহমানসহ আমার ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এছাড়া মানি লন্ডারিং, দুর্নীতিসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা সে না করেছে। প্রত্যেকটা আজ সাজাপ্রাপ্ত। পলাতক হয়ে ওই লন্ডনে বসে এখন সোস্যাল মিডিয়ায় বড় বড় কথা বলে। চোরের বড় গলা আছে সেই বড় গলাই আমরা শুনি। তার সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসে না কেন? সাহস থাকলে বাংলাদেশে এসে কথা বলুক।
রোববার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির কাছে ক্ষমতা হচ্ছে তাদের অর্থ বানানোর মেশিন। ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। তারা যেন এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং মানুষের কাছে আমাদের সেটা তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির কাজ সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, মানুষ খুন করা, ভোট চুরির জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করা। এসমস্ত কাজ বিএনপি করে গেছে। ২০০১ ক্ষমতায় আসার পর তাদের এ তাণ্ডব আমরা দেখেছি। এরপর ২০১৩ সালে অগ্নিসন্ত্রাস। মানুষ বাসে চড়ে যাচ্ছে, লঞ্চে যাচ্ছে, ট্রেনে যাচ্ছে সেখানে পেট্রোল বোমা দিয়ে তাদের পুড়িয়ে মারল। তিন হাজার আটশ গাড়ি তারা পোড়ালো। তিন হাজার মানুষ অগ্নিদগ্ধ হলো। মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। মা দেখলো তার মেয়ে পুড়ে যাচ্ছে। আবার দেখলো তার ছেলে পোড়া, স্ত্রী দেখে তার স্বামী পোড়া। সেই মানুষগুলো আজও দুরবস্থায় আছে। সেগুলো আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন। যারা মানুষ জীবন্ত পোড়াতে পারে, জীবন্ত হত্যা করতে পারে তাদের কাছে রাজনীতি বলতে কিছু নেই।
আমাদের দেশে একটা গ্রুপ আছে তারা নানা সময় তথ্য দিয়ে থাকে। তারা কখনো গ্রামে যায়নি। গ্রামের মানুষের কথা শোনেনি। গ্রামের মানুষের অবস্থাও তারা দেখেনি। আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। তারা প্রাইভেট টেলিভিশনে গিয়ে টকশো করবে। আমাদের দেওয়া টেলিভিশন, আমাদের দেওয়া বিদ্যুৎ, আমাদের দেওয়া ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গীবত গায়। এটা তাদের চরিত্র। তবে ওই মিথ্যা বেশিদিন টেকেনি। সাময়িকভাবে তারা এটা করতে পারে। সত্যের জয় হয়। সত্যের জয় হবেই এটাই বাস্তবতা।
পদ্মা সেতু নির্মাণ বাঁধা দিয়েছিল। টাকা ফেরত নিয়েছিল। সেদিন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম কোনো দুর্নীতি হয়নি। তারা সেটা প্রমান করতে পারেনি। তাই সেতু আমরা নিজেদের অর্থে করেছি। সেদিন বাংলাদেশের মানুষের সহযোগী পেয়েছিলাম। এই বাংলাদেশের মানুষ তো আমার বড় শক্তি। তাদের উৎসাহ পেয়েছি। আমার দলেরও অনেকে বলেছিল এটা সম্ভব নয়। বিশ্বব্যাংক ছাড়া এটা সম্ভব নয়। আমি বলেছিলাম আমি করব। তারা বলেছিলেন কিভাবে করবেন। তখন আমি বলেছিলাম দেখেন কিভাবে করি। বাংলাদেশের মানুষ আমার পাশে আছে। সেদিন দেশের ১৭ কোটি মানুষই আমাকে বলেছিল আপনি করেন আমরা আছি। এই শক্তি যার আছে তারা পারে। আজ সেটা আমরা করে দেখিয়ে দিলাম বাংলাদেশের মানুষ পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কিছু মানুষ আছে কথায় কথায় নালিশ করে। নালিশ করে কি হয়। ওই যে কথায় আছে না নালিশ করে বালিশ পাবে। ওরা ওইটাই পাওয়ার যোগ্য। যাদের নিজেদের ঘটিতে জোর থাকে না। যাদের উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস থাকে না। তাদের কাজ শুধু বিদেশের মানুষ কানে নালিশ আর সোস্যাল মিডিয়া বিভ্রান্ত ছড়ানো। আর তারা সেটাই করে বেড়ায়।
এর আগে প্রটোকল ভেঙে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার হেঁটে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দুদিন সফরের শেষ দিনে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যান তিনি।
Leave a Reply