অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ বলেছে, আমেরিকা লেবাননে এমন একজন প্রেসিডেন্ট চাপিয়ে দিতে চায় যিনি কিনা সর্বোত্তম উপায়ে ওয়াশিংটন ও তেল আবিবের স্বার্থ রক্ষা করবে। লেবাননের পার্লামেন্ট যখন সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের একজন উত্তরসুরি নির্বাচন করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে তখন হিজবুল্লাহর ধর্ম বিষয়ক কাউন্সিলের সভাপতি শেখ মোহাম্মাদ ইয়াজবেক এ মন্তব্য করেন।
তিনি গতকাল বৈরুতে এক বক্তব্যে বলেন, লেবাননের জনগণের দুর্ভোগ যখন প্রতিদিন বাড়ছে তখন সমঝোতা, সংলাপ, বোঝাপড়া ও চুক্তির দরজাগুলো একের পর এক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এসব দরজা খোলা না হলে চলমান অচলাবস্থা নিরসন হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
শেখ মোহাম্মাদ ইয়াজবেক বলেন, সবগুলো রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে একসঙ্গে বসে একজন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন, লেবাননে এখন এমন একজন যোগ্য প্রেসিডেন্ট প্রয়োজন যিনি দেশের জনগণের অধিকারের প্রশ্নে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেবেন না এবং সরকারের সব বিভাগের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে দেশকে ক্রমেই অবনতি হতে থাকা আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি দেবেন।
লেবাননের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি গত ৩১ অক্টোবর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। কিন্তু এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির পার্লামেন্ট নয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ১২৮ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ১০৫ সদস্যের উপস্থিতিতে ভোটাভুটি হয়। এতে সাবেক প্রেসিডেন্ট রেনে মোয়াওয়াদের সন্তান ও সিনিয়ার সংসদ সদস্য মিশেল মোয়াওয়াদ ৩৯ ভোট পান। প্রথম রাউন্ডের ভোটাভুটিতে জয়লাভের জন্য এই ভোট যথেষ্ট ছিল না। প্রথম রাউন্ডের ভোটাভুটিতে পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ বা ৮৬ জন সংসদ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়।
এর পরবর্তী রাউন্ডগুলোতে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ট। বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটিতে ৩৯ জন সংসদ সদস্য ভোটদানে বিরত থাকেন এবং বাকি সাংসদরা অন্যান্য প্রার্থীকে ভোট দেন। পার্লামেন্ট স্পিকার নবীহ বেররি আগামী ১৫ ডিসেম্বরকে পরবর্তী ভোটাভুটির দিন ধার্য করেছেন।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত লেবাননের গৃহযুদ্ধ চলার সময় দেশটি বেশ কয়েকবার প্রেসিডেন্টের সংকটে ভুগেছে। এছাড়া, দেশটি গত মে মাস থেকে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে পরিচালিত হচ্ছে। লেবাননের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির খ্রিস্টান নাগরিকদের মধ্য থেকে কোনো নেতা সেদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী থাকেন সুন্নি মুসলমান এবং পার্লামেন্ট স্পিকার নির্বাচিত হন শিয়া মুসলমানদের মধ্য থেকে।
Leave a Reply