অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ক্রিমিয়া সেতুতে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ড্রোন হামলার শোধ নিতে ব্যাপক গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের প্রধান দুই সামুদ্রিক বন্দরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছে রুশ বাহিনী। কিয়েভের অভিযোগ— ইউক্রেনের শস্য রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে রুশ বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ইউক্রেনের সংযোগ রক্ষাকারী কার্চ সেতুতে ড্রোন হামলার জবাব দিতে এই আঘাত হানা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় মিলিটারি কমান্ডের কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতের দিকে দেশটির প্রধান সামুদ্রিক বন্দর ওডেসা ও তার আশপাশের এলাকা, মাইকোলেইভ সমুদ্রবন্দর এবং রেলবন্দর কুপিয়ানস্কে একযোগেহ একের পর এক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। তাদের ছোড়া ক্যালিব্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরকভর্তি ড্রোনে ওডেসা বন্দরের অবকাঠামো এবং আশপাশের বেশকিছু ভবন ও বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে মাইকোলেইভ বন্দরেও।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে তারা ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩১টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছেন।
রোববার গভীর রাতে ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডকে সংযোগকারী কার্চ সেতুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেনীয় বাহিনী। এতে সেতুটির স্প্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে একপাশ দেবে যায়।
কার্চ সেতুতে হামলার পর সোমবারই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছর স্বাক্ষরিত শস্যচুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় মস্কো। তারপর সোমবার গভীর রাতে ইউক্রেনের প্রধান দুই সেতুতে হামলা ঘটে। রুশ বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্রিমিয়া সেতুতে হামলা জবাব দিতেই ওডেসা ও মাইকোলেইভে হামলা চালানো হয়েছে।
ওডেসা ও মাইকোলেইভ ইউক্রেনের প্রধান সমুদ্রবন্দর। কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী এই দু’টি বন্দরটি দিয়েই মূলত চলাচল করে ইউক্রেনের বাণিজ্যিক জাহাজগুলো। সোমবারের হামলায় বন্দরটির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে মেরামত না করা হলে এটি আর ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেলের বীজ উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশ। ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনের গম ও ভোজ্যতেলের ওপর নির্ভরশীল। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম এই খাদ্যশস্য ও তেলবীজ।