অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইহুদিবাদী ইসরাইলের সন্ত্রাসী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর প্রধান ড্যাভিড বার্নিয়ার সম্প্রতি (রোববার) ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইলি ও ইহুদিদের প্রতি এই দেশটির আঘাতের জবাবে ইরানি অনুচরদের দিয়ে অথবা পাচার হয়ে যাওয়া ইরানি অস্ত্র দিয়ে দেশটির ভেতরেই কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ইরানি নেতা বা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হবে।
ইসরাইলের সন্ত্রাসী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ খুব কমই এ ধরনের হুমকি দিয়ে থাকে। ইসরাইল মাঝে মাঝে ইরানের ওপর হামলার হুমকি দিয়ে আসলেও প্রকাশ্যে কখনও কোনো ইরানি কর্মকর্তা হত্যার দায়িত্ব স্বীকার করেনি যদিও ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীসহ কোনো কোনো কর্মকর্তাকে গুপ্ত হামলায় হত্যা করার বিষয়ে পরোক্ষ স্বীকারোক্তি দিয়েছে কখনও কখনও।
জানা গেছে বার্নিয়ারের ঘোষিত হত্যার আগাম হুমকির তালিকায় রয়েছেন ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী, ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান ও এই বাহিনীর কুদস্ ব্রিগেডের বর্তমান প্রধানসহ আরও কয়েকজন।
সন্ত্রাসী ইসরাইল প্রতিরোধ অক্ষের হামলায় তার নখর ও দাঁতের ধার বেশ ব্যাপক মাত্রায় হারানোর কারণে বহু বছর ধরেই ফাঁকা হুমকি দেয়ার প্রবণতা জোরদার করেছে। অতীতে ফিলিস্তিনিরা বা ইসরাইলের যে কোনো প্রতিপক্ষ ইসরাইলি সন্ত্রাসের মোকাবেলায় বেশ নিষ্ক্রিয় থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিরোধ-অক্ষ ইসরাইলকে বড় ধরনের পাল্টা আঘাতের মাধ্যমে ভীত-সন্ত্রস্ত রাখতে সক্ষম হচ্ছে। অন্য কথায় ইসরাইলের একচেটিয়া আধিপত্য বা দাপটের দিন বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে।
তাই সাম্প্রতিক দিনগুলোতে লেবানন ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামী নেতৃবৃন্দ এবং ইরানি নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির কথা বা প্রতিরোধকামী দেশগুলোতে হামলার হুমকি বার বার উচ্চারণের স্পর্ধা দেখাচ্ছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী কর্মকর্তারা, আর মোসাদও তাতে যুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি ইসরাইল বলেছিল লেবানন যদি ইসরাইল বিরোধী সামরিক তৎপরতা চালায় তাহলে দেশটিকে প্রস্তর যুগে ফিরিয়ে আনবে ইসরাইল! এর জবাবে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছিলেন ইসরাইল লেবাননে হামলা চালানোর মত বোকামি করলে ইসরাইলকেই প্রস্তর যুগে পাঠানো হবে। আসলে ইরান বা লেবাননে হামলা চালানোর মত ক্ষমতা ও সাহস ইসরাইলের নেই! কারণ ইসরাইল এখন পশ্চিম তীরের জেনিন ও নাবলুসের মত এলাকার মজলুম ফিলিস্তিনি মুজাহিদদেরই সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে ও নাকানি-চুবানি খাচ্ছে! তাই ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের প্রধান সহযোগী ইসলামী ইরান ও লেবাননের বিরুদ্ধে ব্যর্থ আক্রোশে ফুঁসে উঠছে ইসরাইলের সন্ত্রাসী, ফ্যাসিস্ট ও বর্ণবাদী শাসকরা। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি সংগ্রামীরা এখন মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযান চালানোর মত সক্ষমতা অর্জন করেছে। এইসব অভিযানের মধ্যে রয়েছে রকেট হামলা, গুলি বর্ষণ, ককটেল মলোটোভ নিক্ষেপ, ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো এবং ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মত কার্যক্রম।
ইসরাইল যখন মুসলমানদের প্রথম কিবলার এলাকাসহ পশ্চিম তীরের সর্বত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসযজ্ঞ ও জমি দখলসহ সব ধরনের নৃশংস তৎপরতা চালাচ্ছে তখন তাদের প্রতিরোধ জোরদারের জন্য বাইরের বা ইসরাইলি নেতাদের উস্কানি ও হুমকির দরকার হয় না। সম্প্রতি ইসরাইলি সেনারা কয়েকজন ফিলিস্তিনি মহিলার সম্ভ্রম হানি করেছে। তাই প্রবল প্রতিশোধ ও ক্ষোভের আগুন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত ইসরাইলি শাসকদের মুখে শোনা যাচ্ছে প্রলাপ ও ফাঁকা বুলি।