অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আমিরুল মুমিনিন হজরত আলী (আ.)’র শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাতে তেহরানে ইমাম খোমেনী (রহ.) হোসাইনিয়াতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপস্থিতিতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ‘ইবাদত উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে। এই উৎসবকে ‘ফেরেশতাদের উৎসব’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ইরানে এই উৎসবটি ‘জাশনে তাকলিফ’ নামে পরিচিত।
এই উৎসবে উপস্থিত হয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, এই ‘তাকলিফ’ উৎসবে তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমিরুল মুমিনিন (আ.)’র শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষেও তোমাদের সবার প্রতি আমার শুভেচ্ছা।
তিনি আরও বলেন- হে আমার প্রিয় মেয়েরা, তোমাদের প্রতি আমার পরামর্শ হচ্ছে তারুণ্যের শুরু থেকেই দয়ালু আল্লাহর বন্ধু হয়ে যাও। আল্লাহর সঙ্গে বন্ধুত্বটা কেমন? আল্লাহর সঙ্গে বন্ধুত্বের একটি উপায় হলো, যখন নামাজ পড়ো তখন এটা মনে রাখবে যে, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কথা বলছো। এছাড়া নামাজে তোমরা যেসব শব্দ উচ্চারণ করো সেগুলোর অর্থ শিখে নাও। আল্লাহর সঙ্গে বন্ধুত্ব করার আরেকটি উপায় হলো, তিনি যে কাজগুলো করতে বলেছেন সেগুলো করা এবং যে কাজগুলো করতে তিনি নিষেধ করেছেন সেগুলো করা থেকে বিরত থাকা।
উপস্থিত শত শত মেয়ের উদ্দেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, তোমরা দেশের বিশিষ্ট নারীদের কাতারে স্থান করে নেওয়ার চেষ্টা করবে। এটা কীভাবে সম্ভব? খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করবে, ক্লাসের পড়া ও হোম ওয়ার্ক ঠিক মতো সম্পন্ন করবে, কর্মতৎপরতা চালাবে, চিন্তা করবে, বই পড়বে। ইনশাআল্লাহ তাহলেই ভবিষ্যতে বিশিষ্ট নারীতে পরিণত হবে।
তাকলিফ উৎসব হচ্ছে এমন একটি ধর্মীয় উৎসব যেখানে ছেলে-মেয়েদের দায়িত্বপ্রাপ্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানো হয়। মুসলিম মেয়ে ও ছেলেদেরকে একটি বয়সের পর আবশ্যকীয় ধর্মীয় আদেশগুলো মেনে চলতে হয় এবং যেসব কাজ নিষেধ করা হয়েছে সেগুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। তবে মেয়ে ও ছেলে একই বয়সে এই দায়িত্ব পায় না। মেয়ে ও ছেলের ক্ষেত্রে এই দায়িত্বপ্রাপ্তির বয়সে তারতম্য রয়েছে।
ইরানে প্রতি বছর মেয়ে ও ছেলেদের জন্য এ ধরণের তাকলিফ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে তাদেরকে আল্লাহপ্রদত্ত দায়িত্বের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে একজন মেয়ে বা ছেলে জানতে পারে যে, সে এখন দায়িত্ব পালনের বয়সে পা রেখেছে এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ধর্ম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিটি মুসলিম পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রে এ ধরণের উৎসব পালন জরুরি। এর মাধ্যমে মেয়ে ও ছেলেরা সম্মানিতবোধ করে এবং তারা যে একটা পর্যায় পার করে নতুন আরেকটি পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়েছে তা বুঝতে পারে।
Leave a Reply