অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউজ অব কমন্সের ৬০ সদস্য ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা তেল আবিবের সঙ্গে যেকোনো ধরনের অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক চুক্তি করা থেকে বিরত থাকার জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দুই স্বতন্ত্র পার্লামেন্ট মেম্বার রিচার্ড বুরগন ও ইমরান হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই ৬০ পার্লামেন্টারিয়ান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমিকে একটি চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, বারবার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার কারণে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
পার্সটুডের রিপোর্ট বলছে, ওই চিঠিতে গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত বা আইসিসির পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি রুলিংয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয় যেখানে আইসিসি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ইসরাইলি দখলদারিত্বকে অবৈধ বলেছিল এবং অবিলম্বে ওই দখলদারিত্ব অবসানের আহ্বান জানিয়েছিল।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার লন্ডন শহরের ফিলিস্তিনি সমর্থকরা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘটন করেন এবং তারা অবিলম্বে ইসরাইলের কাছে সমরাস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভকারীরা গাজা উপত্যকার ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান জাতিগত শুদ্ধি অভিযানে অংশ না নিতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরাইলি ভয়াবহ গণহত্যায় ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কাজেই এই গণহত্যায় অংশ নেয়া যাবে না।
এর কয়েক মাস আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা মার্ক স্মিথ গাজায় জাতিগত নিধনযজ্ঞে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে সহযোগিতা করার প্রতিবাদে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
ওই সিনিয়র ব্রিটিশ কূটনীতিক পরে এক এক্স বার্তায় লিখেছিলেন: গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা সবার কাছে স্পষ্ট। আমি এই ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞের একজন অংশীদার হিসেবে নিজের কাজ চালিয়ে যেতে পারি না।
ইহুদিবাদী ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের নিরপরাধ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ গণহত্যা শুরু করে।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ইসরাইলি গণহত্যার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ ও এক লাখ সাত হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতের উল্লেখযোগ্য অংশই হচ্ছে নারী ও শিশু।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদিদের অভিবাসনের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অবৈধ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা এবং তাদের গোটা ভূখণ্ড দখল করার জন্য বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল।
Leave a Reply