November 12, 2025, 11:19 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

উত্তরাঞ্চলে মাঠভর্তি সোনালী ধান ; কার্তিকের মঙ্গা বলে কিছু আর নেই

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : হেমন্তের হাওয়া বইছে। কার্তিকের মঙ্গা বলে কিছু আর নেই এখন। মাঠভর্তি সোনালী ধানে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘ধরার আঁচল ভরে দিলে প্রচুর সোনার ধানে।/দিগঙ্গনার অঙ্গন আজ পূর্ণ তোমার দানে।’ প্রতিবারের মতো এবারও পূর্ণতা নিয়েই এসেছে হেমন্ত। এরই মাঝে প্রিয় ঋতুর কয়েক দিন গত হয়েছে। প্রকৃতিতেও আসছে নানা পরিবর্তন। এখন ভোর রাতে একটা শীত শীত অনুভূতি হচ্ছে। অনেকেই গায়ে জড়িয়ে নিচ্ছেন হাল্কা কাঁথা। দিনের বেলায় যে রোদ, সেটিও অতো তীব্র নয়। সব মিলিয়ে উপভোগ্য হয়ে উঠছে হেমন্ত।
কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এ দুই মাস হেমন্তের কাল। হেমন্তের প্রকৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য শিশির। সবুজ ঘাসের গায়ে এরই মাঝে জমতে শুরু করেছে শিশির বিন্দু। গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে শিশির ঝরতে শুরু করেছে। জমিতে এখন আগাম আমন ধান। ধানের সরু পাতায় টলমলে শিশির বিন্দু। ধানের ডগা বেয়ে স্বচ্ছ জলের বিন্দু মাটিতে পড়ছে। নরম হচ্ছে মাটি। কুয়াশার বুননও ক্রমে ঘন হচ্ছে। সকালে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে সামনে তাকালে পুরোটা দেখা যাচ্ছে না। দূরের অনেক কিছুই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। ঢাকায়ও খুব ভোরে শিশির ঝরছে। কংক্রিটের নগরীতে ধানখেত নেই। তবে পার্কে উদ্যানে গাছ আছে। গাছের পাতায় শিশির। শিশির বিন্দুর ওপর সূর্যের আলো এসে পড়তেই হিরকখ-ের মতো চিকচিক করছে।
দৃশ্যমান হচ্ছে হাল্কা কুয়াশাও। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে একটু বের হলেই কুয়াশার দেখা মিলছে। তবে এখনো হাল্কা বুনন। এই কুয়াশার জাল, এই শিশির কণা জীবনানন্দের প্রিয় পঙ্ক্তির কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে কবি লিখছেন, ‘পান্ডুলিপি কাছে রেখে ধূসর দ্বীপের কাছে আমি/নিস্তব্ধ ছিলাম ব’সে;/শিশির পড়িতেছিল ধীরে-ধীরে খ’সে;/নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি/উড়ে গেলো কুয়াশায়,-কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো…।’

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন থেকে যত দিন যাবে ততই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমতে থাকবে। পার্থক্য যত কমবে তত বাড়তে থাকবে ঠান্ডার অনুভূতি। এভাবে শীতকে হাতে ধরে নিয়ে আসবে হেমন্ত।
তবে হেমন্তের মূল পরিচিতি ফসলের ঋতু হিসেবে। এক সময় বাংলায় বছর শুরুই হতো হেমন্ত দিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু হিসেবে এর ছিল আলাদা গুরুত্ব। বর্তমানে বর্ষার শেষ দিকে বোনা হয় আমন-আউশ। শরতে বেড়ে ওঠে। হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে সেই ধান পরিপক্ব হয়। কাটাও শুরু হয়ে যায়।

কিছুকাল আগেও হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিক ছিল অনটনের। ফসল হতো না। বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যাভাব দেখা দিত। সারাবছরের জন্য জমিয়ে রাখা চাল ফুরিয়ে যেত এ সময়ে এসে। ধানের গোলা শূন্য হয়ে যেত। কার্তিকের দুর্নাম করে তাই বলা হতো ‘মরা কার্তিক’। রবীন্দ্রনাথের কবিতায়ও দুর্দিনের উল্লেখ পাওয়া যায়। কবিগুরু লিখেছেন: শূন্য এখন ফুলের বাগান, দোয়েল কোকিল গাহে না গান,/কাশ ঝরে যায় নদীর তীরে…।
অবশ্য বর্তমানে কার্তিক আর মরা কার্তিক হয়ে নেই। ফসলে যথেষ্টই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। শস্যের বহুমুখীকরণের ফলে মোটামুটি সারাবছরই কম বেশি ফসল উৎপন্ন হয়। ব্যস্ত থাকতে হয় কৃষককে। বছরজুড়ে নানা ফসল ফলান তারা। আয় রোজগারও ভালো। পাশাপাশি এখন কার্তিক মাসেই হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে আগাম আমন ধানের শীষ। পাকা ধান কাটা শুরু হয়ে যায়। ঠিক এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আগাম আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে চলছে ফসল কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। রাজশাহী রংপুর বগুড়া নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। দিনভর চলছে ধান কাটা। কোথাও কোথাও কাস্তে হাতে ধান কাটছেন কৃষক।

কোথাওবা যন্ত্রে কাজ হচ্ছে। কিষানিরাও কাজ করছেন মাঠে। বিশেষ করে ধান মাড়াই, শুকিয়ে ঘরে তোলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় খুশি মনেই অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে তাদের। পরের মাস অগ্রহায়ণে সারাবাংলায় হবে নবান্ন উৎসব। বাঙালির প্রধান ও প্রাচীনতম উৎসবগুলোর অন্যতম নবান্ন। এ সময় আমন ধান কাটা শুরু হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফসল উৎপাদনের সময় এটি। প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টন আমন উৎপাদন হয় এ সময়। নতুন ধান থেকে পাওয়া চালে হবে নবান্ন উৎসব। আমনের চালে প্রথম রান্না হবে।

একসময় ফসল কাটার আগে বিজোড় সংখ্যক ধানের ছড়া কেটে ঘরের চালে বেঁধে রাখা হতো। বাকি অংশ চাল করে সে চালে পায়েস রান্না হতো। এভাবে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হত নবান্ন উৎসব। শুধু গ্রামে নয়, এখন শহরেরও থাকে নানা আয়োজন। গ্রামের মতো না হলেও প্রতিবছর ১ অগ্রহায়ণ রাজধানী ঢাকায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের নবান্ন উৎসব আয়োজন করা হয়।

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page