25 Feb 2025, 09:12 pm

এসকে সিনহার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে যুক্তরাষ্ট্রে এমএলএআর করবে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা এবং তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি ফ্রিজ করাসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহে শিগগিরই দেশটির মিউচুয়্যাল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমে এসব তথ্য জানান।

দুদক সচিব বলেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্ন ভাবে অবৈধ টাকা অর্জন করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় আমেরিকায় পাচার করে তার ছোট ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯০ ডলার ট্রান্সফার করেন এবং তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার ক্যাশ দিয়ে একটি বাড়ি ক্রয় করেন। ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২), (৩) ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করে।

তিনি বলেন, তদন্তকালে এস কে সিনহার ওই বাড়ি ক্রোকসহ আমেরিকার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের জন্য আদালতে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ওই বাড়িটি ক্রোকসহ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। ফলে বাড়িটি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আমেরিকায় শিগগিরই এমএলএআর প্রেরণ করবেন।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এসকে সিনহা এবং তার ভাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বাড়ি জব্দ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। এ আবেদনের ওপর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান আদেশ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় গত বছরের ৩১ মার্চ এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্রে এসকে সিনহার জন্য তিনতলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার। যার দাম দুই লাখ ৮০ হাজার ডলার, ৮৬ টাকা ডলার ধরলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় দুই কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এই বাড়ি কেনার আগে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে নিজের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরও একটি বাড়ি কিনেছিলেন অনন্ত কুমার সিনহা। পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথম বাড়িটি কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য নগদ টাকায় বাড়ি কেনেন।

মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনন্ত কুমার সিনহার নিউ জার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি হিসাবে ৬০ হাজার ডলার জমা হয়। ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এসকে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থপাচারের বৈধ কোনো উৎসের সন্ধান পায়নি সংস্থাটি।

দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করে, এসকে সিনহা বিভিন্ন সময়ে ঘুষ হিসেবে যেসব টাকা গ্রহণ করেছেন তা বিদেশে পাচার করেন। দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনে।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ফারমার্স ব্যাংক লি. গুলশান শাখা থেকে ৪ (চার কোটি) টাকার ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে ওই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর ও মানিলন্ডারিং করার কারণে ঢাকার বিশেষ আদালত-৪ সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ আসামিকে ১১ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *