অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে একটি কবরস্থানে নির্বাচনি প্রচারণা চালানোয় সমালোচনার মুখে পড়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছেন, এটা অসম্মানজনক এবং এটা তার রাজনৈতিক স্টান্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এক্স প্ল্যাটফরমে শনিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্লিংটন কবরস্থান সফরের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই সফর অসম্মানজনক এবং রাজনৈতিক স্টান্ট।’ আরলিংটন কবরস্থান রাজনীতির জায়গা নয় বলেন মন্তব্য করেন কমলা হ্যারিস। তিনি লেখেন, ‘এটা একটা গৌরবময় স্থান; এমন একটা জায়গা যেখানে আমরা আমেরিকান বীরদের সম্মান জানাতে একত্রিত হয়েছি যারা এই জাতির সেবায় চূড়ান্ত আত্মত্যাগ করেছেন।
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের সময় নিহত ১৩ জন সেনা সদস্যের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ট্রাম্প সোমবার কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট পরিষেবা সদস্যদের আত্মীয়দের সঙ্গে সে সময় ছবি তোলেন। তার প্রচারণা দল সেই ভিডিও তুলেছে এবং বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে। ফেডারেল আইন এবং পেন্টাগনের নীতি অনুযায়ী, কবরস্থান এবং পানশালাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা যায় না বা সেখানে রাজনৈতিক কার্যকলাপের অনুমতি নেই।
কমলা লিখেছেন, ‘আমাকে স্পষ্ট করে বলতে দিন। সাবেক প্রেসিডেন্ট একটি রাজনৈতিক স্টান্টের জন্য পবিত্র ভূমিকে অসম্মান করেছেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার এক বিরল বিবৃতি জারি করে বলেছে, ‘ট্রাম্পের প্রচারণা দলকে সাম্প্রতিক যুদ্ধে নিহত সেনাদের সমাধি বিভাগে ছবি তোলা বন্ধ করতে বলার পর কবরস্থানের এক কর্মী সদস্যকে হঠাত্ করে একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয়।’ ট্রাম্পের প্রচারাভিযান দল সেই কর্মীর তীব্র সমালোচনা করে তাকে ‘ঘৃণ্য ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছে। সামরিক বাহিনী স্পষ্ট করে বলেছে, স্টাফ সদস্য পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং অন্যায়ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সেনা সদস্য যুদ্ধক্ষেত্র হতে ফেরত আসেন তাদের বলা হয় ভেটেরান। সেই ভেটেরানদের ট্রাম্পের অবমাননার ইতিহাসেরও উল্লেখ করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি লেখেন, ‘ট্রাম্পের কাছে এটা নতুন কিছু নয়। এটা এমন একজন ব্যক্তি যিনি আমাদের সাবেক পরিষেবা সদস্যদের শোষক এবং পরাজিত বলেছেন এবং সম্মানপদক প্রাপ্তদের অবমাননা করেছেন।’ ইউএস আউটলেট ‘দ্য আটলান্টিক’ দ্বারা প্রকাশিত ২০২০ সালের নিবন্ধে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ঐ সেনাদের ‘শোষক’ এবং ‘পরাজিত’ বলেছিলেন, তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
ট্রাম্পের আর্লিংটন সফর নিয়ে বেশ কয়েক জন ভেটেরান এবং সেনাদের আত্মীয়রাও সমালোচনা করেন। শুক্রবার রাতে পেনসিলভানিয়ার জনসটাউনে ট্রাম্প বলেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারানো ঐ সেনাদের পরিবারই নাকি তার সঙ্গে নিজেদের ছবি তুলতে বলেছিল। তার দাবি, ‘আমি বললাম অবশ্যই। আমার প্রচারের প্রয়োজন নেই, আমি অনেক কম প্রচার পেতে চাই।’ ট্রাম্প এই সমালোচনার জন্য হোয়াইট হাউজকে দায়ী করেছেন। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের পরিচালনার দিকটির সমালোচনা করেন ট্রাম্প। -ডয়চেভেলে
Leave a Reply