বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম উপকুলীয় বনবিভাগের আওতাধীন উকুলীয় বেড়িবাধের বনাঞ্চল দিন দিন উজাড় হতে চলেছে। এক শ্রেণীর সংঘবদ্ধ কাঠ চোর মিরসরাইয়ে প্রকাশ্যে দিনদুপুর ও রাতের আধারে উপকূলীয় বনাঞ্চলের বেড়িবাধের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সন্ধীপের উড়িরচর, আনোয়ারার পারকিরচর, বাশখালী, পতেঙ্গা, কাট্টলী, সীতাকুন্ডের বাশবাড়িয়া, ও মিরসরাই উপজেলার উপজেলার সাহেরখালী বেড়িবাঁধ ঘেঁষে বনাঞ্চলে চলছে এই মহোৎসব। দুর্বৃত্তদের গাছ কাটার ঠুক-ঠাক শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো উপকূলীয় বনাঞ্চল। কাঠ খেকোদের এমন কর্মকান্ড ঘিরে বন বিট কর্মকতাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। যদিও এমন পরিস্থিতে জনবল সংকটের অজুহাত মিরসরাই উপকূলীয় বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর মোল্লার! তার দাবি এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার চাইতেও বেজা’র ভূমিকা বেশি।
এসব এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকাশ্যে দিনে-রাতে বাইন, ঝাউ, কেওড়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির লবন সাহিঞ্চু গাছকাটা চলছে। গাছ বহনকারী গাড়ির শব্দে রাতে ঘুমানো যায় না। গাছ কাটতে কাটতে বনাঞ্চলের ভেতরে এখন খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, কাঠ খেকোরা দিনের বেলায় বড় বড় গাছের ডালপালা কেটে নেয় এবং রাতের আঁধারে সেই গাছ গুলোর মূল অংশ কেটে গুড়ি রেখে যায়। রাতের আঁধারে সড়কে গাছের গাড়ির শব্দে স্থানীয়দের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোগী ও শিশুদের না ঘুমাতে পারার আর্ত চিৎকার যেন দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপকূলীয় বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর মোল্লা জানান, উপকুলীয় বনবিভাগে রয়েছে জনবল সংকট এবং বন অধিগ্রহণ হওয়ায় বেজার দায়িত্বশীল ভূমিকা নেই। তিনি বলেন আমাদের ভূমিকার চাইতে বড় ভূমিকা হচ্ছে বেজা কর্তৃপক্ষের। আমরা চেষ্টা করতেছি কিন্তু বেজা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন নাহ্। বেজার নিকট অনেক বার বার শরণাপন্ন হয়েছি। কিন্তু তাদের কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমাদের জনবল কম, ওনাদের আওতায় তো পুলিশ, আনসার আছে আমি বলেছি যৌথ ভাবে যদি টহল বা কিছু করা যায় তাহলে বন্ধ করা সম্ভব।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার্থে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে সৃজন করা উপকূলীয় বন দুর্বৃত্তদের হাতের ছোঁয়ায় এযেন খেলার মাঠে পরিণত হচ্ছে। বনের বেশ কয়েক জায়গা দিয়ে অবৈধ কাঠের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বিশাল সড়ক। আবার এসব সড়কের দেয়া হয়েছে ‘বাবুল দূর, বেলায়েত দূর, সিরাজ কোম্পানি দূর, জিসি দূর’ সহ হরেক রকমের নাম। বনের ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা মিলে বড় বড় গাছের গুড়ি। আবার বনের গহীন ভেতর থেকে দুপুর বেলায় গাছ কাটার ঠুক-ঠাক শব্দে যেন অতিষ্ঠ পুরো বন।
জানতে চাইলে ডোমখালী উপকূলীয় বন বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ রনী জানান, বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হয়। কিছু দিন আগে একটা মামলাও দেয়া হয়েছে। আমাদের তবে জনবল কম হওয়াতে থামানো যাচ্ছে না।
এবিষয়ে সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী জানান, গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছু শুনিনি। তবে উপকূলীয় বন বেজা কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
Leave a Reply