অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইউক্রেনের বন্দরে আটকে থাকা শস্য নিরাপদে বের করে নেওয়ার জন্য করা কৃষ্ণ সাগর শস্য রপ্তানি চুক্তির মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়ানো হয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের জুলাইয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে প্রথম এ চুক্তি হয়। ওই সময় চুক্তির মেয়াদ ছিল ১২০ দিন। মাঝে চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় রাশিয়া। তবে অনেক দেন দরবারের পর নভেম্বরেও আবারও চুক্তি নবায়ন করা হয়। যেটির মেয়াদ ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ শেষ হয়। এখন নতুন করে আরও ২ মাসের জন্য এটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তবে ইউক্রেন চেয়েছিল চুক্তির মেয়াদ নতুন করে আরও ১২০ দিনের জন্য বাড়াতে। কিন্তু রাশিয়া এতে রাজি হয়নি। উল্টো তারা হুমকি দিয়েছে, আবার যখন চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সময় আসবে তখন কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে হবে। নয়ত মেয়াদ বাড়বে না।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা করে কৃষ্ণ সাগরের নিয়ন্ত্রণ নেয় রাশিয়া। আর এ কৃষ্ণ সাগর দিয়েই বিশ্বব্যাপী নিজেদের শস্য রপ্তানি করে ইউক্রেন। রুশ নৌ সেনারা কৃষ্ণ সাগরে অবস্থান নেওয়ার পর ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দেয়।
এদিকে পরবর্তীতে এ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর শর্তও জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ স্থায়ী দূত ভাসালি নেবেনজিয়া শুক্রবার বলেছেন, ‘রাশিয়ার কৃষি পণ্য এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবকিছু থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের হাতে এখন দুই মাস সময় আছে, যদি তারা চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়াতে চায়।’
পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও, তাদের কৃষি পণ্য ও সারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তবে মস্কোর দাবি, অন্যান্য খাতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে পণ্য সরবরাহ, অর্থ পাওয়াসহ তাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ দূত আরও বলেছেন, রাশিয়া চায় তাদের কৃষি ব্যাংকগুলোকে যেন আবার সুইফট ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয় এবং তাদের কৃষি পণ্য, যন্ত্রাংশ ও খুচরা যন্ত্রাংশ পরিবহণ ও বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া বন্দরগুলোতে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার জাহাজ ও কার্গোগুলোকে ইন্সুরেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেটি তুলে দিতে হবে এবং যে পা্ইপ লাইনের মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার অ্যামোনিয়া যায় সেটি পুনরায় চালু করে দিতে হবে এবং রাশিয়ার সার কারখানাগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল করে দিতে হবে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাশিয়ার কৃষি পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে সমস্যা চলছে। সূত্র: রয়টার্স
Leave a Reply