অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বসতবাড়িতে চুরির অভিযোগে হাফিজার রহমান (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) ভোর রাতে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙ্গামোড় যুগিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজার রহমানের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চকমামরোজপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে হাফিজার রহমানসহ তিন জন যুগিপাড়া গ্রামে আসে। চুরির জন্য তারা ওই গ্রামের বসিন্দা রফিকুল ইসলামের বাড়ির একটি ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। ওই ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন মালামাল ব্যাগে ভর্তি করে চোররা। ঘটনার সময় বাড়ির মালিক রফিকুল ঢাকায় এবং তার স্ত্রী চাম্পা বেগম বাবার বাড়িতে ছিলেন।
ওই বাড়িতে চুরির পর চোররা পাশের নুরু মিয়ার বাড়ির গোয়ালঘরে ঢুকে তিনটি গরু নিয়ে বের হয়। গরু নিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের ফাঁকা জমিতে যেতেই আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাদের ধাওয়া করে। গ্রামবাসীর ধাওয়ায় দুই জন পিকআপ নিয়ে পালিয়ে গেলেও আটক হয় হাফিজার। পরে তাকে স্থানীয় নুরুর বাড়িতে এনে একটি ঘরে আটকে রেখে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবর দেওয়া হয়। ততক্ষণে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে টেনে-হিঁচড়ে হাফিজারকে বের করে গণপিটুনি দেয়। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে হাফিজার। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দামোদরপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুই বসতবাড়িতে গরু, স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরির ঘটনায় হাতেনাতে আটক ওই যুবককে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সে। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা অপর দুই জন পিকআপ নিয়ে দ্রুত পথচারীদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে দুই থেকে তিন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) এনায়েত হোসেন জানান, চুরির সময় পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত ওই যুবকের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে নিহত যুবকের নাম হাফিজার বলে জানা গেছে। সে দীর্ঘদিন ধরে চুরি পেশার সঙ্গে জড়িত। নিহত হাফিজার সম্পর্কে আরও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং তার সঙ্গে থাকা অন্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মৃত্যুর ঘটনাটি তার পরিবারের লোকজনকে অবগত করা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনার পর সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিহত হাফিজারের স্বজনদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তারা হাসপাতালে থাকা মরদেহ দেখতেও আসেনি।
Leave a Reply