অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় হামাসের শক্ত ঘাঁটি ঘিরে ফেলার দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে তারা। এ সময় ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ থেকে ‘হিট-অ্যান্ড-রান’ যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করে হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
গাজায় আক্রমণের অগ্রগতির বিস্তারিত না জানিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা যুদ্ধে ভালো অবস্থানে রয়েছি। আকর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছি এবং গাজা শহরের উপকণ্ঠ অতিক্রম করেছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
ইসরায়েলের প্রধান সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহর ঘেরাও সম্পন্ন করেছে। গাজা শহরে হামাসের প্রধান ঘাঁটি রয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক প্রকৌশলীদের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইদ্দো মিজরাহি বলেছেন, সেনারা মাইন এবং ফাঁদের মুখোমুখি হচ্ছে। হামাস দ্রুত শিখছে ও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র আবু উবাইদা বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের নিহত সেনাদের সংখ্যা সরকারের ঘোষণার চেয়ে অনেক বেশি।
গাজায় স্থল অভিযান সম্প্রসারণের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৮ জন সেনা নিহত ও কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল।
কয়েকজন বাসিন্দা ও সংঘাতে লিপ্ত দুই পক্ষের ভিডিওতে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসলামিক জিহাদ যোদ্ধারা সুড়ঙ্গ থেকে ইসরায়েলি ট্যাংকে হামলার বের হয়ে আসে এবং পরে আবার সুড়ঙ্গে লুকিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি-ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা তাদের চারটি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে পানির সংকট।
ইউএনআরডব্লিউএ আরও জানিয়েছে, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একইসময় বিচ শরণার্থী শিবিরে একটি স্কুলে নিহত হয় আরও এক শিশু।
স্কুলগুলোর দু’টি ভিডিও সামনে এসেছে। একটি ভিডিওতে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে মরদেহগুলো মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশু রয়েছে।
দ্বিতীয় ভিডিওটিতে, বিচ শরণার্থী শিবিরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনের ছবি ধারণ করা হয়েছে। এতে বিস্ফোরণের শব্দের সঙ্গে বিদ্যালয়ের মূল ভবনের পিছনে থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। এসময় ভয় ও আতঙ্কে শিশুসহ বেশ কয়েকজন মানুষকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
ভিডিও দু’টির সত্যতা যাচাই করেছে বিবিসি।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি বিমান হামলাকে দায়ী করেছে গাজার হামাস কর্তৃপক্ষ। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি আইডিএফ।