বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাটারী চালিত রিকসা -ভ্যান ও ইজি বাইক চালকদের দাপট দেখা গেছে। পুলিশের আসকারায় এরা অটো রিকশা নিয়ে নগরীর অলি গলি সহ প্রধান সড়ক গুলোতে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে।
আবার তারা অযৌক্তিক দাবী নিয়ে আগ্রাবাদ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। শ্রমিকদের অনড় অবস্থানের মুখে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য ৭ দিনের সময় নিয়েছে পুলিশ। প্রথমে শ্রমিকরা না মানলেও পরবর্তীতে তারা পুলিশ ও তাদের প্রতিনিধির আশ্বাসে সড়ক ছাড়ে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত নগরের আগ্রাবাদ বাদামতল ও বন্দর জোনের ট্রাফিক কার্যালয় সম্মুখের সড়কে তারা অবস্থান নিয়েছিলেন। ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’র ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দেওয়ানহাট থেকে মিছিল সহকারে আনুমানিক ৫শ অটোরিকশা শ্রমিক আগ্রাবাদ অভিমুখে রওয়ানা হয়। তাদের হাতে একটি ব্যানারও ছিল। যেখানে লেখা ছিল, ‘চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাটারিচালিত যানবাহনে ট্রাফিক হয়রানি ও জুলুম বন্ধ করো। রেকার বিলসহ ৩২৫০ টাকা অতিরিক্ত জরিমানা ও ১০ দিন গাড়ি আটকানোর অন্যায্য বিধান বাতিল করো। হয়রানি বন্ধে নীতিমালা, রুট পারমিট ও সার্ভিস লেইন নির্মাণ করো।’
বেলা ১১টার দিকে তারা আগ্রাবাদে নগর পুলিশের বন্দর জোনের ট্রাফিক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং সড়কের চতুর্পাশের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে আশপাশের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
দেখা গেছে, গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে থাকায় নগরের চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, লালখান বাজার, ওয়াসা, জিইসি, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, বারিক বিল্ডিং এলাকায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। যার ফলে কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীরা মহাভোগান্তিতে পড়েন। অনেককেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা হতেও দেখা গেছে। অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা সন্তান কোলে নিয়েই স্কুলে রওয়ানা হয়েছিলেন।
বিক্ষোভরত এক শ্রমিক বলেন, ‘গলির ভেতর থেকে আমাদের গাড়ি ধরে নিয়ে যায়। এটা বন্ধ করতে হবে। আগে মামলা ছিল ৭৫০ টাকা। এখন আমাদের কাছ থেকে ৩৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তারা আমাদের সাথে চাঁদাবাজি করছে। এটা আমরা মানবো না। আমাদের দাবি আজকেই মানতে হবে।’
আন্দোলনকারীদের পক্ষে ডবলমুরিং থানার শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘ব্যাটারি রিকশার লাইসেন্স দিতে হবে। ঢাকা, চাঁদপুর কুমিল্লার মতো চট্টগ্রামেও লাইসেন্স দিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলিগলি, সড়কে চালানোর অনমুতি দিতে হবে। যেসব রিকশা আটক করা হয়েছে সেসব রিকশা ছেড়ে দিতে হবে এবং আগামী ৭দিন পর্যন্ত আরো কোনা রিকশা আটক করা যাবে না।’
তবে বিক্ষোভের একপর্যায়ে সেখানে থাকা শ্রমিক প্রতিনিধি পুলিশের দেওয়া সময় মেনে নিতে রাজি হন। এসময় সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘অটোরিকশা চালকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি স্মারকপত্র পেয়েছি। সেটিতে আপনাদের দাবি-দাওয়া সন্নিবেশন করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আমরা আপনাদের প্রতিনিধির সাথে আধঘণ্টাব্যাপী আলোচনা করেছি।’
উপ-কমিশনার বলেন, ‘দাবি-দাওয়াগুলো পুলিশ কমিশনার স্যারের কাছে আমরা উপস্থাপন করবো। সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা এবং সুনির্দিষ্ট সমাধানের জন্য আমরা চসিক-সিডিএ’র সাথে আলোচনা করবো। এটা করতে সময় লাগবে।’
নগরীর সচেতন মহলের অভিযোগ এসব ব্যাটারী চালিত রিকসা ট্রাফিক আইন মানেনা, চালকরা তাদের খুশী মত রিকশা চালায়। নগরীতে যানজটের সৃস্টি করে। এদের বেপরোয়া গতির রিকশা চালানোর কারণে দূর্ঘটনার ঝুকি আছে। এ কারণে অটো রিকশা বন্ধ চান নগরবাসী।
Leave a Reply