অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ২০২৩ সালে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি কেজির বেশি ধরা হয়েছে। ২০২২ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। সেখান থেকে একটু কম হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর মধ্যে ১৩০ মিলিয়ন কেজি চা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা হবে এবং বাকি ১০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত ৫৭তম বিটিআরআই বার্ষিক কোর্স ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, শ্রমিক কর্মবিরতির কারণে গত আগস্ট বছরের মাসে চায়ের উৎপাদন কমে যায়। দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ১৩ আগস্ট থেকে সারাদেশের চা-বাগানগুলোতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকেরা। এ পরিস্থিতিতে ২৭ আগস্ট চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন। বৈঠকে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বাড়িয়ে ১৭০ টাকা করার বিষয়ে সম্মত হন বাগান মালিকেরা। এরপর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেন চা শ্রমিকেরা। ৩-৪ সপ্তাহ চা শ্রমিকরা কাজ না করায় চায়ের উৎপাদনে প্রভাব পড়ে।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফারজানা জাহান চৌধুরী পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ. কে. এম রফিকুল হক, বাংলাদেশি চা সংসদের চেয়ারম্যান এম শাহ আলম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আবুল খায়ের গ্রুপের প্রধান নির্বাহী (অবসরপ্রাপ্ত) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শহিদুল্লাহ, রুপসী বাংলা বোর্কাসের পরিচালক সৈয়দ মনীর, জেরিন চা বাগানের উপ-ব্যবস্থাপক মো. সেলিম রেজা, মাইজডিহি ডানকান চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক মো. জাকারিয়াসহ সিনিয়র টি প্ল্যান্টাররা, বিভিন্ন চা বাগানের ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপকসহ চা বোর্ডের কর্মকর্তারা।
বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন চা বাগানের ৩৫জন ব্যবস্থাপক। সেখানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশি চা সংসদ সিলেট সার্কেলের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চা চাষের ইতিহাসে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে ২০২১ সালে। সেবছর দেশের ১৬৭টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগানে চা উৎপাদিত হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। সেবার ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। ২০২০ সালে মহামারির প্রথম বছরে চা উৎপাদনেও ধাক্কা লেগেছিল। তখন ৮ কোটি ৬৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। এক বছরের মাথায় উৎপাদন ১ কোটি ১ লাখ কেজি বেড়ে নতুন এ রেকর্ড হয়। উত্তরাঞ্চলে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চাষ থেকে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে। ২০২০ সালে যেখানে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল, সেখানে এবার হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ কেজি।
Leave a Reply