25 Nov 2024, 05:25 am

চলনবিলে উদ্যোগের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে মুক্তা আহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল এলাকায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ঝিনুক চাষের মাধ্যমে মুক্তা আহরণ করে বিদেশে রপ্তানি করে শত শত কোটি কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যথাযথ উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আর জনসচেতনতার অভাব এবং সুষ্ঠুভাবে বাজারজাতকরণের সমস্যা দূরীকরণের উদ্যোগ না নেওয়ায় ব্যাপক সম্ভাবনাময় ওই মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, বিল ও জলাশয়ে ঝিনুক থেকে মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা হয়ে থাকে। বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল, ডোবা-পুকুরসহ বিস্তৃত জলসীমায় প্রাকৃতিক নিয়মে ঝিনুক জন্মে থাকে। এসব ঝিনুকের মধ্যে সাদা, গোধূলি, ধূসরসহ বিভিন্ন রং ও আকারের মুক্তা ও মতিপাল জন্মে থাকে।

এ অঞ্চল থেকে বছরে হাজার হাজার মণ ঝিনুক আহরণ করা হয়। ঝিনুক আহরণকারীদের সিংহভাগই অদক্ষ, আনাড়ি। তাদের এ কাজে সম্যক জ্ঞান না থাকায় ও ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণের সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকায় চলনবিলে জন্ম নেওয়া বিপুল পরিমাণ মুক্তা আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ওইসব ঝিনুকের মধ্যে জন্ম নেওয়া মুক্তার সিংহভাগই চলনবিলের নদী-নালা, খাল-বিল ও বিস্তীর্ণ জলসীমা অভ্যন্তরেই থেকে যাচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে এ অঞ্চলের দরিদ্র জেলেরা অজ্ঞতার বেড়াজাল ডিঙিয়ে উঠতে না পারায় বিলাঞ্চলে জন্মানো সিংহভাগ মুক্তা, চন্দ্রিকা, মতিপাল, চুমকি ও শ্বেতী আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

বর্তমানে অদক্ষ আনাড়ি জেলেরা বিলাঞ্চল থেকে বছরে মাত্র দেড় কোটি টাকার মুক্তা আহরণ করছে। শাহজাদপুর উপজেলা পৌর এলাকার মণিরামপুর বাজারের যমুনা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী প্রকাশ অধিকারী বলেন, দেশে কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে যে ধরনের মুক্তা উৎপাদন করা হচ্ছে তা স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারকদের কাছে আকার ও প্রকারভেদে ভরিপ্রতি দেড়শ’ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু সমুদ্র ও বিলাঞ্চলের ঝিনুকের অভ্যন্তরে জন্ম নেওয়া মুক্তার দাম ক্যারেটপ্রতি প্রায় ৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ কৃত্রিম উপায়ে ঝিনুকের হ্যাচারিতে উৎপাদিত মুক্তার মান ও দামের তুলনায় সমুদ্রগর্ভে ও বিলাঞ্চল থেকে আহরণ করা মুক্তার মান ও দাম বহুগুণে বেশি।
চলনবিল অঞ্চলের জেলেরা অবসর সময়ে বসে না থেকে নদী-নালা, বীল, ডোবা, পুকুরসহ বিস্তীর্ণ জলসীমা থেকে প্রাথমিক অবস্থায় মুক্তা সংগ্রহের পর ঝিনুকের খোল থেকে চুন তৈরি করছে। মুক্তার দাম নির্ভর করে এর রং, সৌন্দর্য, মাধুর্য, আকৃতির ওপর। মুক্তা সোনার গহনাসহ অলঙ্কারের শোভাবর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া মুক্তা থেকে ওষুধ তৈরি করা হয়।

গুটিবসন্ত, হৃদরোগ, হাড় ও দাঁতের রোগের প্রতিষেধক হিসেবে মুক্তা ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। নানা গুণে গুনান্বিত এ মুক্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে চাষাবাদ ও আহরণ করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 14648
  • Total Visits: 1300744
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২২শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, ভোর ৫:২৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018