অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সামনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, তাই অপতৎপরতা বেড়েছে কূটনীতিকদের। যেটি অন্যদেশে সম্ভব নয় সেটিই তারা করেন বাংলাদেশের মেরুদন্ডহীন রাজনৈতিক নেতাদের ঘাড়ে ভর করে। বিশ্ব রাজনীতির উত্তাল এ সময়ে বিভিন্ন মহল ভিন্ন ভিন্নভাবে পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছেন তাদের মতো করে। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
গেল ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে বিশ্ব ভাগ হয়েছে নতুন করে।
অতঃপর নিত্য-নতুন মেরুকরণে পাল্টে দিচ্ছে অর্থনীতি, বাণিজ্য আর কূটনীতির হিসেব-নিকেষ। বিশ্বের পূর্ব থেকে পশ্চিম কিংবা উত্তর থেকে দক্ষিণ-ছোট বড় রাষ্ট্রসমূহে আঁচ লেগেছে নয়া নীতির। ফলে রাজনীতি হয়েছে কঠিন থেকে কঠিনতর আর অর্থনীতির সূচক ওঠা-নামা করছে বারংবার।
খাদ্যপণ্য কিংবা জ্বালানি সরবরাহের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে বিঘ্নিত হয়েছে। ব্যাংক ব্যবস্থা, মুদ্রানীতিতে এসেছে পরিবর্তন। উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ-সবখানে দেখা দিয়েছে ডলার সংকট। মূল্যস্ফিতি বিপর্যস্ত করেছে জনজীবন। অল্পসময়ে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নে বাংলাদেশেও এসবের প্রভাব পরিলক্ষিত।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারি মন্ত্রী আফরিন আক্তার ইতোমধ্যে ঘুরে গেছেন। শিগগিরই আসছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হাসান বলেন, “রাশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে অহরহ আসেন না। কাজেই এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অনেক স্বার্থ জড়িয়ে আছে। রাশিয়া কিন্তু রোহিঙ্গা প্রশ্নে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।”
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “রাশিয়া নানা ইস্যুতে অত্যন্ত ইনটেনসিভ অবস্থায় আছে। পাইপ লাইনে যেসব প্রজেক্ট আছে যেমন রূপপুরে তাদের বড় ইনভলমেন্ট আছে। সেগুলোতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় তা নিয়ে আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও রাশিয়াকে আমরা আরও কাছে পেতে চাই।”
মিয়ানমার থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পেয়েছে চীন। ভৌগোলিকভাবে এদেশের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে আরও কিছু পরাশক্তি।
মো. তৌহিদ হাসান বলেন, “যদিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন আমাদেরকে সমর্থন দেয়নি। তারপরও চীনের সঙ্গে আমাদের অনেক রকম অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। সেটা চিন্তা করে আমরা চীনের বিরুদ্ধে যেতে পারিনি, আবার সরাসরি মার্কিন পক্ষেও যেতে পারিনি।”
বারণ থাকার পরও প্রটোকল ভেঙ্গে কূটনীতিতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খোলামেলা মন্তব্য থেমে নেই। এ অবস্থায় নিজেদের ব্যর্থতার ফাঁক-ফোকর গলে বাইরের শক্তি আধিপত্যবাদ কায়েমের চেষ্টা করছে- মন্তব্য সাবেক পরারাষ্ট্র সচিবের।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হাসান বলেন, “সে যে হঠাৎ করে বলেছে তা কিন্তু নয়। জাপানিরা হঠাৎ করে কিছু বলেনা। এক ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েই কথাটা বলেছে। কিছুদিন আগে জার্মান রাষ্ট্রদূতও প্রায় একই কথা বলেছেন। আমেরিকানরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছে, অন্যান্যরা ঘুরিয়ে বলেছে। তবে সরাসরি বলেছে জার্মানি, এখন জাপান।”
অভ্যন্তরীণ কিংবা বৈশ্বিক- সবদিক দিয়ে আগামীর দিন হবে বহু ধরণের জটিলতায় ভরপুর। পররাষ্ট্রিক পথচলা হবে সমস্যাসঙ্কুল। তাই সুদূরপ্রসারী চিন্তা আর বিচক্ষণতা দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তৎপর হতে হবে বাংলাদেশের।
Leave a Reply