December 19, 2025, 7:16 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম আটক ঝিনাইদহের মহেশপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে নারীর আত্মহত্যা বিজিবির অভিযানে মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারী বাংলাদেশী নাগরিক আটক ও মাদক উদ্ধার মাগুরায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বিদায়ী সাক্ষাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় দূষিত বাতাসের কারণে বছরে অকালে মারা যাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ : বিশ্বব্যাংক আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী  খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এবছর বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাচ্ছেন ৮ জন গত নভেম্বরে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত ; আহত ১ হাজার ৩১৭
এইমাত্রপাওয়াঃ

জেলখানায় জাতীয় ৪ নেতার হত্যাকান্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এ হত্যাকান্ডের জন্য আগে থেকেই একটি ঘাতক দলও গঠন করা হয়। খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং¡ বঙ্গবন্ধুর খুনিরা এ পরিকল্পনা করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পরপরই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমনভাবে নেয়া হয়েছিল পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটার সাথে সাথে যাতে আপনা আপনি এটি কার্যকর হয়। আর এ কাজের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দলও গঠন করা হয়। এই ঘাতক দলের প্রতি নির্দেশ ছিল পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটার সাথে সাথে কোন নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করবে।

বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী সভার সবচাইতে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান এবং এবং লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আব্দুর রশীদ এ পরিকল্পনা করে। এ কাজের জন্য তারা একটি ঘাতক দলও গঠন করে।

এ দলের প্রধান ছিল রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন। সে ছিল ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন অফিসার। শেখ মনির বাসভবনে যে ঘাতক দলটি হত্যাযজ্ঞ চালায় সেই দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিল মুসলেহ উদ্দিন। ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর  আগে খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটান।

ঘাতকরা কারাগারে দেশের এই চার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে গুলি করে এবং পরে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। জাতীয় এ চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার হাতে আটক বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দান করেন।

প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনী মাসকারেনহাস তার ‘বাংলাদেশ এ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও অন্যান্য ঘটনা পর্যবেক্ষণপূর্বক  বিশ্ববাসীর কাছে  সর্বপ্রথম উন্মোচিত করেন। মাসকারেনহাস বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পর মোশতাক রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্ত সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি তার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আওয়ামী লীগকেই বেশি বিবেচনা করতেন। সামরিক বাহিনী নিয়েও তার মাথা ব্যথা ছিল।

মোশতাক যখন দেখলেন মুজিব হত্যার বিষয়টি সহজ হয়ে আসছে, তখনই তিনি তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী এবং কামরুজ্জামানের মতো চারজন প্রভাবশালী নেতাকে বন্দি করেন। সানডে টেলিগ্রাফের সাংবাদিক পিটার লিগ তাজউদ্দিনের বন্দিত্ব সচক্ষে দেখেছেন। সামরিক বাহিনীর লোকজন তাঁকে জীপে উঠাচ্ছিলেন তখন পিটার তাজউদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন নতুন সরকারে যোগ দিতে যাচ্ছেন কি-না। জবাবে তাজউদ্দিন বলেন, তাকে সামরিক ক্যাম্পে ডিটেনশনে নেয়া হচ্ছে।

মাসকারেনহাসকে ফারুক পরে জানান, তিনি, রশীদ এবং মোশতাক একটা পাল্টা অভ্যুত্থান ঠেকানোর জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ফারুক তাকে বলেন, শেখ মুজিবকে আমরা যেভাবে সরিয়েছি, ঠিক একইভাবে কেউ মোশতাককে সরিয়ে দিতে পারে। পাল্টা অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা ছিল। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যারা পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটাবে, তাদের প্রথম পছন্দ হবে এই চার নেতা।

কাজেই তারা এই নেতাদের সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেন।

তাদের পরিকল্পনাটি ছিল এরকম, যদি পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে বা মোশতাককে হত্যা করা হয়, তাহলে দুটি কাজ দ্রুত সারতে হবে। প্রথমেই প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ করা, যাতে রাষ্ট্র পরিচালনায় কোন শূন্যতা সৃষ্টি না হয়। একই সাথে একই সময় এক দল যাবে সেন্ট্রাল জেলে। সেখানে তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী এবং কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হবে। এ কাজের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দল গঠন করা হয়। যারা ছিল এই বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন অফিসার রিসালদার মুসলেহ উদ্দিনকে এ দলের প্রধান করা হয়। ফারুক বলেন, এ পরিকল্পনাটি এমনভাবে করা হয়, যাতে পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটার সাথে সাথে এ প্লানটি আপনা-আপনি কার্যকর হয়ে যায়।

পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরেই কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এর আগে পঁচাত্তরের ৩ অক্টোবর খোন্দকার মোশতাক টিভি ও রেডিও ভাষণে ঘোষণা দেন যে, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৬ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক তৎপরতার উপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হবে এবং সংসদীয় সরকার গঠন করা হবে। একইভাবে সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু মোশতাক এটি সত্য বলেননি। অন্তত চার নেতার  মুক্তির ব্যাপারে তিনি কোন প্রচেষ্টাই গ্রহণ করেননি।

গোলাম মুরশিদ তার ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ গ্রন্থে লিখেছেন মোশতাক জেল হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন কেবল ফারুক আর রশিদকে নিয়ে। তিনি ঠিক করেছিলেন, যে কোন পাল্টা অভ্যুত্থান হলে কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী এবং কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হবে যাতে নতুন সরকার গঠিত হলেও এই নেতারা  তাতে নেতৃত্ব দিতে না পারেন। সূত্র: বাসস

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page