অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কিয়েভের দাবি বিবেচনা না করেই আমেরিকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সংঘাতের অবসান নিয়ে আলোচনা করার পর, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসের মনোযোগের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (১২ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছিলেন। উভয় নেতা টেলিফোনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইউক্রেন সংঘাতের অবসানের বিষয়টি। এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দূত রোদিভান মিরোশনিক বলেছেন: রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে আসন্ন আলোচনা কিয়েভের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ইউরোপীয় অনেক দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরোক্ষ বার্তায় বলেছেন যে, ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া কিয়েভ কোনও চুক্তি মেনে নেবে না, তারপরও ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেন সংঘাতের অবসান নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হবে।
অপরদিকে, জার্মানি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, পোল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, ইউরোপীয় এক্সটার্নাল সার্ভিস এবং ইউরোপীয় কমিশনসহ ইউরোপীয় দেশগুলো বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) সকালে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে ইউক্রেনের ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার’ প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেনে ‘স্থায়ী ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমেরিকার সাথে সহযোগিতা করার জন্য তাদের প্রস্তুতির কথাও গুরুত্বের সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। এই বিবৃতি থেকে বোঝা যায় যে, এই দেশগুলোও রাশিয়ার সাথে আমেরিকার আলোচনা মেনে নিয়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো পর্যালোচনা করলে এটা বলা অসঙ্গত নয় যে উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) তে যোগদানের জন্য কিয়েভের প্রচেষ্টাই যুদ্ধের জন্য দায়ী। কাজেই পশ্চিমা নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সমাপ্তির বিষয়টি এই বিষয়টির উপরই নির্ভর করছে।
তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় দেশগুলো বিশেষ করে ন্যাটো সংস্থায় যোগদানের ব্যাপারে এই সংস্থার নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রচেষ্টা এখনও বাধাগ্রস্তই রয়ে গেছে। এরই মধ্যে নয়া মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সম্প্রতি পেন্টাগনের প্রধান হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ন্যাটো প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগদানের জন্য তার প্রথম বিদেশ সফরে জার্মানিতে গেছেন। সেখানে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন: ওয়াশিংটনের মতে ‘ইউক্রেনের সীমান্ত ২০১৪ সালে ফিরে যাওয়া অসম্ভব’।
ইউক্রেনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইরানের একটি প্রবাদের কথা মনে পড়বে: আমও গেল ছালাও গেল…’। এই প্রবাদটি এমন লোকদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় যারা পরিবর্তিত পরিস্থিতি কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে উন্নতি-অগ্রগতির পরিবর্তে আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং একটা অস্পষ্ট গ্যাঁড়াকলে আটকে থাকে।
Leave a Reply