স্টাফ রিপোর্টার : আধুনিক সভ্যতা বিকাশে দেশের অনেক বনভূমি উজাড় করা হয়েছে। বনভূমি উজাড়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন পশু-পাখি তাদের বাসস্থান হারিয়েছে। ফলে বিলুপ্ত হয়েছে অনেক পশু পাখি। তেমনি এক প্রজাতির বাদুড়ও তাদের বাসস্থান না থাকায় বিলুপ্ত শ্রেনীর অর্ন্তগত হতে চলেছে। হরহামেশা দেখা না পাওয়া বাদুড়ের দেখা মিলেছে সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুরের একটি কবরস্থানের বটগাছে। যা দেখতে প্রতিদিন গ্রামটিতে ভীড় করেছেন দর্শনার্থীরা।
সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়নের ঝিটকিপোতা গ্রামে প্রায় ৫০ বছর আগে এ বটগাছটিতে কিছু বাদুড় বসবাস শুরু করে। সেখান থেকে পরের কয়েক বছরে বাদুড়ের সংখ্যা গিয়ে দাড়ায় কয়েক হাজারে। বাদুড়ের সংখ্যাগত কারনে এক সময়ের ঝিটকিপোতা গ্রাম নাম হারিয়ে ‘বাদুড়তলা’ নাম ধারন করেছে। বাদুড়তলা গ্রামের মানুষজনও বিলুপ্ত প্রজাতির বাদুড় শিকার ও উতক্ত না করায় এ বাদুড় যেন স্থায়ী আসন গেড়েছে। দিনে থাকে বাংলাদেশে আর রাতে খাবার খেতে যায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের হেলাঞ্চা, বাগদা, চুয়াটিয়া,সাতমাইল গ্রাম গুলোর বাগানে। খাবার খাওয়ার পর ভোর রাতে আবার ফিরে আসে তাদের ঠিকানায়। গাছটিতে থাকা ৮-১০ হাজার বাদুড়ের বসবাস দেখতে প্রতিদিন গ্রামটিতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
প্রকৃতি প্রেমী নাজমূল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাদুড় গুলো আমাদের গ্রামের বটগাছে বসবাস করছে। এই বাদুরের নাম অসুসারে বটতলার নাম হয়েছে বাদুড়তল।
গ্রামের মোস্তাক আহম্মেদ জানান, বাদুড়গুলো রাতে খাবারের জন্য ভারতসহ বিভিন্ন স্থানে চলে যায়,আবার খাবার খেয়ে সকালে চলে এসে সারাদিন থাকে বটগাছে। স্থানীয়দের কোন ক্ষতি করে না বাদুড় গুলো।
স্থানীয়রা আরও জানান, বাদুড়গুলো এখানে নির্ভয়ে বসবাস করছে বহুকাল ধরে। বাদুড় নিয়ে কল্পকাহিনি আর কুসংস্কারের যুগও কেটে গেছে। এরা তাদের উপকারই করছে। কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা সহ ফুল-ফলের পরাগায়ণ সৃষ্টি করছে। মানবকল্যাণকারী ও পরিবেশবান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।
মহেশপুর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, পশুপাখি পরিবেশ সংরক্ষনে গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা রাখে। ৫০ বছর ধরে বাদুর গুলো বাদুড়তলা বটগাছে বসবাস করছে। যদি কেউ বাদুড় নিধন ও বাদুড়কে ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply