এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : ধানের জমিতে ক্ষতিকর পোকাদমনে প্রাকৃতিক পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন ঝিনাইদহের কৃষকরা। ধান উৎপাদনের প্রধান অন্তরায় ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে বন্ধুপোকা সহ পানি, মাটি ও বাতাস দূষিত হয়ে, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। কিন্তু কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে ক্ষতিকর দিকগুলো এখন কমতে শুরু করেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষকের মাঝে পার্চিং পদ্ধতিতে ধান চাষের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করে কৃষি বিভাগ। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের হলিধানী ইউনিয়নে পার্চিং পদ্ধতির উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আবু হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত- উপ-পরিচালক (উদ্যান) সেলিম রেজা, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নুর-এ নবী এবং হলিধানী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আবু হোসেন পার্চিং পদ্ধতিতে চাষাবাদের উপকারিতা সম্পর্কে বলেন, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, টি আকৃতির দন্ড বা বাঁশের জটা প্রভৃতি খাড়াভাবে জমিতে পুঁতে পাখি বসার কিংবা আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয় তাকে পার্চিং বলে। বর্তমানে ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং একটি সফল কৃষকবান্ধব প্রযুক্তি। পার্চিং করতে কৃষককে ধান চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হয় না। কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনায় বা রাস্তার ধারে গাছের ডাল প্রাপ্তি সহজলভ্য বিধায় পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ধান উৎপাদনের প্রধান অন্তরায় ক্ষতি কারক পোকার আক্রমণ। ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য কৃষক ব্যাপক হারে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে কিছু উপকারি পোকাও মারা যায় এবং মানবদেহের জন্যও অনেক ক্ষতির কারন হয়।
তিনি আরো বলেন, পার্চিং হলো এমন একটি ব্যবস্থা, পোকামাকড় দমনে এটাকে যান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা হয়। যেখানে বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতে রয়েছে সেখানে যেহেতু কোন গাছপালা থাকে না। এ কারনে পোকা খাদক অনেক পাখি বসতে পারে না, এজন্য পোকাও খেতে পারে না। আমরা যদি ধানের জমিতে ডাল পুতে দিই তাহলে পাখি গুলো বসতে পারে, এবং ফিঙে জাতীয় পাখিগুলো প্রাকৃতিক নিয়মেই ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে জমিকে পোকা মুক্ত করে। এই প্রযুক্তিতে ক্ষতিকারক পোকামাড়ক দমন করা সম্ভব হয়। অন্যদিকে এই পোকামাকড় দমনে আমরা অনেক রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করি। এই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারি।
Leave a Reply