25 Feb 2025, 09:38 am

ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে : আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়ের-অলিভিয়ের গুরিঞ্চাস। প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার কয়েক দিন আগে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা এবং অভিবাসন সীমিত করার উদ্যোগ অর্থনীতির সরবরাহ ব্যবস্থাকে সংকুচিত করতে পারে এবং মূল্য বৃদ্ধি ঘটাতে পারে বলে এএফপির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানান গুরিঞ্চাস।

ট্রাম্পের আরেকটি পরিকল্পনা, যেমন লালফিতার জটিলতা কমানো এবং কর হ্রাস, চাহিদা বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হলো, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ঝুঁকির দিকে তাকালে মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগামী ঝুঁকি দেখতে পাই।’

গুরিঞ্চাস ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর সদর দপ্তরে এএফপিকে সাক্ষাৎকার দেন, যা আইএমএফ-এর গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস (ডব্লিউইও) প্রতিবেদনের প্রকাশের এক দিন আগে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি : ডব্লিউইও আপডেটে ট্রাম্পের প্রস্তাবগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি কারণ নীতিগত ‘অনিশ্চয়তা’ রয়েছে। তবে আইএমএফ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে।

অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্ক ও অভিবাসন নীতিগুলো মুদ্রাস্ফীতির কারণ হতে পারে। তবে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা দাবি করেছেন যে তার পরিকল্পিত পদক্ষেপের পুরো প্যাকেজ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো দুইটি কোয়ার্টার-পয়েন্ট হার কমানোর বেশি করবে না বলে প্রায় ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা ধরা হয়েছে।

গুরিঞ্চাস বলেন, আইএমএফ আশা করছে ফেডারেল রিজার্ভ ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে উভয় বছরেই অর্ধ শতাংশ হারে সুদের হার কমাবে, যা ডিসেম্বরে ফেড কর্মকর্তাদের মধ্যম পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

চীনের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি বিপরীতমুখী ঝুঁকি : বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন সম্পত্তি খাতের সংকট এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতির অনিশ্চয়তার সঙ্গে লড়াই করছে। সেখানে পরিস্থিতি ভিন্ন।

ডব্লিউইও প্রতিবেদনে আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে যে চীনের প্রবৃদ্ধি ধীরগতির পথে অব্যাহত থাকবে, তবে সরকারের সাম্প্রতিক রাজস্ব সহায়তা প্যাকেজের কারণে এ ধীরগতি তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হবে। এই প্যাকেজের লক্ষ্য হলো ধীরগামী অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা।

গুরিঞ্চাস বলেন, ‘যদি আপনি চীনের দিকে তাকান, তাহলে দেখা যাবে উদ্বেগ হলো- তারা হয়তো মুদ্রাস্ফীতির বিপরীত প্রবণতায় (ডিফ্লেশন) প্রবেশ করতে পারে এবং সম্পত্তি খাতের সংকট আরও খারাপ হতে পারে।’

‘নীতিমালার ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত যে চীনারা সঠিক পথে রয়েছে, তবে হয়তো চীনা কর্তৃপক্ষ আরও কিছু করতে পারে,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও যোগ করেন, “যদি তারা তা না করে, তবে চীন এই ঝুঁকির সম্মুখীন হবে যে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সহায়তা পর্যাপ্ত প্রমাণিত না হতে পারে, যা সম্ভাব্যভাবে প্রবৃদ্ধিতে আরও বড় ধরনের মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে।’

শুক্রবার বেইজিং থেকে শুক্রবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে চীনের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের ৫.২ শতাংশ বৃদ্ধির তুলনায় কম।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *