অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চার ধরনের ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনার সুপারিশ করেছে এ ঘটনা তদন্তে গঠিত কংগ্রেস কমিটি। এর মাধ্যমে আইনের আওতায় আসতে যাচ্ছেন সাবেক এ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
তদন্ত কমিটির প্রধান বেনি থম্পসন জানান, বুধবার (২১ ডিসেম্বর) পুরো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এদিন সাধারণ মানুষও প্রতিবেদনটি দেখতে পারবেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ডেমোক্র্যাট এমপি জেমি রাসকিন এক বিবৃতিতে জানান , ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি অপরাধ সংগঠনের অভিযোগ আনার ব্যাপারে বিচার বিভাগকে সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপারিশকৃত অভিযোগগুলো হলো, সরকারি কার্যক্রমে বাধা প্রদান, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করা, মিথ্যা বক্তব্য দেওয়া ও বিদ্রোহে প্ররোচিত করা।
যদি এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাম্পকে বিচার করা হয় ও অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে ৪০ বছরের জেল হতে পারে তার। আর এমনটি হলে সামনের বছর আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন না ট্রাম্প।
ক্যাপিটল হামলার ঘটনায় কংগ্রেস একাই তদন্ত করছে না। এ ঘটনায় বিচার বিভাগের পৃথক একটা তদন্ত চলমান রয়েছে।
এদিকে, ক্ষমতাসীন দলের (প্রতিনিধি পরিষদের হাউস সিলেক্ট কমিটি) এ সুপারিশ মানতে বাধ্য নয় বিচার বিভাগ। তবে রাসকিন বলছেন, এ সুপারিশের বিপরীতে প্রচুর প্রমাণ তাদের হাতে আছে।
তবে বিচার বিভাগের কাছে এসব সুপারিশ যাতে গ্রহণযোগ্য হয়, সেজন্য একজন বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান বেনি থম্পসন বলেন, অপরাধগুলো কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে সুপারিশগুলো করা হবে। ট্রাম্প এ নিয়ে এখনো সরাসরি কিছু বলেননি।
এদিকে, ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিফেন চিউং তদন্ত কমিটির কড়া সমালোচনা করেছেন ও তাদের ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও এ কমিটি নিজেদের তদন্তের ওপর বেশ আত্মবিশ্বাসী।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) কমিটির সদস্য জো লফগ্রেন গত বলেন, কোনো অভিযোগ সুপারিশ করার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি বেশ সতর্ক। প্রতিটি অভিযোগ সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প ছাড়াও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিষয়েও তদন্ত করছে কমিটি। তাদের মধ্যে ট্রাম্পের আইনজীবী জন ইস্টম্যান, সাবেক আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস, বিচার বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা জেফ্রি ক্লার্কও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর। এর ৬৪ দিন পর ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথসভা বসে। যেখানে ইলেকটোরাল ভোট হিসেবে করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ওই পদক্ষেপ স্থগিত করে দিতে ওইদিন ক্যাপিটলে হামলা চালান ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা। এ হামলার ঘটনায় সাতজন প্রাণ হারান। আহত হন আরও অনেকে।
Leave a Reply