অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সিনিয়র নেতা অমিত শাহ তেলেঙ্গানায় মুসলিমদের সংরক্ষণ সুবিধা বাতিল করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
গতকাল (রোববার) হায়দরাবাদের কাছে চেভেল্লায় একটি জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় অমিত শাহ মুসলমানদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে যে সংরক্ষণ সুবিধা রয়েছে তা বিলুপ্ত করার কথা বলেছেন। তিনি মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছেন।
অমিত শাহ বলেন, তেলেঙ্গানায় বিজেপি সরকার গঠনের পর আমরা মুসলিম সংরক্ষণের অবসান ঘটাব। তপশিলি জাতি-তপশিলি উপজাতি এবং ‘ওবিসি’দের এই অধিকার প্রাপ্য। বিজেপি নেতা অমিত শাহ তেলেঙ্গানায় কে. চন্দ্রশেখর রাও সরকারকে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন এজেন্ডা রাজ্যে বাস্তবায়নের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। অমিত শাহ বলেন, ‘তেলেঙ্গানায় এমন কোনো সরকার চলতে পারে না যার স্টিয়ারিং মজলিশের (ওয়াইসি) কাছে। আমরা মজলিশকে ভয় পাই না। তেলেঙ্গানার সরকার রাজ্যের মানুষের জন্য চলবে, ওয়াইসির জন্য চলবে না।’
অমিত শাহের বক্তব্যের পাল্টা জবাবে মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, ‘মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ ছাড়া তেলেঙ্গানার প্রতি বিজেপির কোনো ভিশন নেই। তারা কেবল ভুয়া এনকাউন্টার, হায়দরাবাদে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, কারফিউ, জেল থেকে অপরাধীদের মুক্তি এবং বুলডোজার দিতে পারে। আপনারা তেলেঙ্গানার জনগণকে এত ঘৃণা করেন কেন?’
ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি
ওয়াইসি বলেন, ‘অমিত শাহ মহাশয়, ওয়াইসি-ওয়াইসি করে এই কান্না আর কতদিন চলবে? কেবল তিক্ত সংলাপ উচ্চারণ করতে থাকেন। অনুগ্রহ করে মাঝে মাঝে রেকর্ড-ব্রেকিং মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব সম্পর্কেও কথা বলুন। দেশের মধ্যে তেলেঙ্গানার মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি।’
বিজেপি নেতা অমিত শাহ অবশ্য এই প্রথম নয় যে, তেলেঙ্গানায় মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি অতীতে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে ওই বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবং এবার চলতি বছরের শেষের দিকে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি পুনরাবৃত্তি করেছেন। এর আগে, কর্ণাটকের বিজেপি সরকার গত মাসে ওবিসি মুসলমানদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণ সুবিধা বাতিল করেছে।
তেলেঙ্গানায় অনগ্রসর মুসলিমরা শিক্ষা ও চাকরিতে ৪ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা পান। এটি প্রায় ১৫ বছর আগে অবিভক্ত অন্ধ্র প্রদেশে কংগ্রেস সরকার চালু করেছিল। রাজ্যের বর্তমান ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-এর নেতৃত্বাধীন সরকার মুসলিম কোটা ১২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব তেলেঙ্গানা বিধানসভায় পাস হয়েছিল এবং পাঁচ বছর আগে তা কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
Leave a Reply