অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ থেকে নিজেকে আড়াল করার হাতিয়ার হিসেবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। ইসরাইলি বিশ্লেষকরা এই পদক্ষেপকে যুদ্ধে ফিরে যাওয়া এবং সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার শেষ উপায় বলে মনে করছেন।
ইহুদিবাদী সংবাদপত্র মাআরিভের বিশ্লেষক রন এডেলস্টাইন এক বিশ্লেষণে সতর্ক করে বলেছেন: আন্তর্জাতিক চাপ এবং অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে মুক্তি পেতে নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় যুদ্ধে ফিরে যাবার পথ তৈরি করতে হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ব্যাপারে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করছেন।
বার্তা সংস্থা ইরনা’র উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, এডেলস্টাইন জোর দিয়ে বলেছে, মার্কিন সরকারও যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার জন্য নেতানিয়াহুর মতলব সম্পর্কে সচেতন। এই পরিস্থিতি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে আদালত এবং জনমত থেকে পালাতে সাহায্য করতে পারে।
এডেলস্টাইন জোর দিয়ে বলেছেন: ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সংকট থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার জন্য হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ব্যাপারে অভিযুক্ত করা; এটা এমন এক পদক্ষেপ যা নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিক চাপ এবং তার আইনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে।
এই ইহুদি বিশ্লেষক আরও বলেন: নেতানিয়াহুর চারপাশের পরাজিত গোষ্ঠী বুঝতে পেরেছে যে গাজা যুদ্ধ মারাত্মক পরাজয় বরণ করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে, কিন্তু তারা এই বাস্তবতা অনেক দেরিতে উপলব্ধি করেছে।
তিনি আরও বলেন: আমরা একটি নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছি। সেটা হলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পটভূমি সৃষ্টি করার কথা বলা হচ্ছে। তাই চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দেওয়ার জন্য বা এটি ব্যর্থ করার জন্য হামাসের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম রোববার ‘আল-আরাবি আল-জাদীদে’র সাথে এক সাক্ষাৎকারে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন: ইসরাইলিরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করলে তার প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি নিষ্ক্রিয় থাকে তাহলে উত্তেজনা আবারও বেড়ে যেতে পারে।
কাসেম বলেন ইসরাইল এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে এবং চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনায় আরও ৯০ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর, ২০২৫) হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ সমাপ্তি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তির ঘোষণা দেয়।
শুক্রবার বিকেলে (১০ অক্টোবর, ২০২৫), ইসরাইলি সেনাবাহিনীও আনুষ্ঠানিকভাবে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে: চুক্তি অনুসারে, ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় অবস্থান করবে। ইহুদিবাদী ইসরাইল যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের বিধান বাস্তবায়নে এমন সময় বাধা দিয়ে যাচ্ছে যখন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করাসহ গাজা ধ্বংস করে বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করছে।#