November 12, 2025, 11:31 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

দেশের ২৫ ভাগ পতিত জমি চাষে সহায়ক হবে বারি উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) সম্প্রতি প্রতিকূল পরিবেশে চাষযোগ্য ধানের ছয় ধরনের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা, প্রতিকূল পরিবেশে চাষযোগ্য অন্যান্য জাতের তুলনায় এই ছয় জাত ফলন বৃদ্ধি এবং বেশি প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকার বৈশিষ্ট্যের কারণে দেশের খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।

যদিও দেশের ০.৪৭ মিলিয়ন হেক্টর (মোট জমির ৫.৫ শতাংশ) পতিত জমির মধ্যে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ ইতোমধ্যেই চাপ সহনশীল জাতের মাধ্যমে চাষের আওতায় এসেছে। প্রতিকূল পরিবেশে চাষযোগ্য নতুন জাতগুলো আরো প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি পতিত জমি শস্য উৎপাদনের আওতায় আনতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশে বীজ সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন, সমন্বয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি) সম্প্রতি নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলো প্রকাশ করেছে। এগুলো হলো, জোয়ার-ভাটা সহনশীল জাত-১০৯, বন্যা সহনশীল জাত-১১০, নিচু জমিতে বন্যা সহনশীল জলি আমন জাত-১১১, লবণাক্ততা সহনশীল জাত-১১২, উচ্চ ফলনশীল বোরো জাত-১১৩ এবং ব্লাস্ট (ধানে এক ধরনের ছত্রাক সংক্রমণ) সহনশীল জাত-১১৪।

জোয়ার সহনশীল বারি ধান-১০৯ জাতটি বারি ধান-৪৪ ও বারি ধান-৫২ এর মধ্যে সংকর করে উদ্ভাবিত হয়েছে। জাতটি প্রথমে বারি’র গবেষণা ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হয়। এরপর ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে জোয়ার-ভাটা এলাকায় কৃষকদের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করানো হয়।

এই ধানের ফলনে দেখা গেছে, জোয়ার-প্লাবিত এলাকায় প্রতি হেক্টরে এই জাতের গড় ফলন ৫.৪০ টন এবং অন্যান্য জাতের গড় ফলন ছিল ৪.৫০ টন।

বন্যা ও জলাবদ্ধতা সহনশীল বারি ধান-১১০ আকস্মিক বন্যার জন্য উপযুক্ত। বন্যা না হলে ধানটি পাকতে গড়ে ১২৩ দিন এবং বন্যা কবলিত এলাকায় ১৩৩ দিন সময় লাগে। বিনা ধান ১১ এর তুলনায় এই জাতের ফলন ২০.৫০ শতাংশ বেশি।

নিচু জমিতে বারি ধান-৯১ ও স্থানীয় আমন জাতের তুলনায় জলি আমন জাত-১১১ বেশি ফলনশীল। লবণাক্ততা সহনশীল বারি ধান-১১২ আমন জাতের এবং এটি তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।

এর আগের বারি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে উচ্চ ফলনশীল বোরো জাত-১১৩ বাজারে ছাড়া হয়েছে। বারি ধান-৮৮ এর তুলনায় এই জাতের গড় ফলন ১১.৫ শতাংশ বেশি এবং প্রতি হেক্টরে গড় ফলন প্রায় ৮.১৫ টন।

ব্লাস্ট সহনশীল বারি ধান ১১৪ দীর্ঘ মেয়াদে ব্লাস্ট থেকে বেঁচে থাকতে পারে। এটি বোরো জাতের ধান এবং এর গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭.৭৬ টন। জাতটিতে উচ্চমাত্রায় ব্লাস্ট প্রতিরোধী জিন রয়েছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার কারণে আমরা প্রতিকূল আবহাওয়া সহনশীল জাতগুলো উদ্ভাবনের ওপর জোর দিয়েছি। আকস্মিক বন্যা, খরা ও লবণাক্ততা এখন আমাদের প্রধান উদ্বেগের কারণ।’

নতুন জাতগুলো যুক্ত হওযার ফলে বারি মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে আটটি উচ্চ-ফলনশীল বা হাইব্রিড জাত রয়েছে।

বারি’র প্রোটোকল অফিসার ড. এম আব্দুল মোমিন বলেন, ‘বিদ্যমান ৩২টি প্রতিকূল আবহাওয়া সহনশীল জাত ইতোমধ্যেই ১৮ থেকে ২০ শতাংশ পতিত জমি উৎপাদনের আওতায় এনেছে। নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলো আরো প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পতিত জমি উৎপাদনের আওতায় আনতে সাহায্য করবে।’

চাপ সহনশীল অন্যান্য জাতের তুলনায় নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলোর জীবনকাল এবং ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের প্রতিকূল আবহাওয়া সহনশীল জাতগুলো সর্বোচ্চ ১৮ দিন পানিতে ডুবে থাকতে সক্ষম। তবে নতুন জাতের ধানগুলো ২১ দিনেরও বেশি জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে। নতুন উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহনশীল বারি ধান-১১৩ এর ফলন বারি ধান-৮৮ এর তুলনায় ১২ শতাংশেরও বেশি। এই বোরো জাতের ফলন হেক্টর প্রতি ৭ টন।

বারি’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. খন্দকার এম ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, ‘আমরা দেশের পাঁচটি অঞ্চল যেমন বরিশাল, সিলেট, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার ও ভোলাকে প্রতিকূল পরিবেশ সহনশীল জাতের ধান চাষের জন্য চিহ্নিত করেছি। তবে, প্রাথমিকভাবে কী পরিমাণ এলাকা বৈরী আবহাওয়া সহনশীল জাতের আওতাভুক্ত হবে তা অনুমানের ভিত্তিতে বলা কঠিন।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক সাইফুল আলম বলেন, ‘আমি আশা করি, এই চাপ সহনশীল জাতগুলো বাড়তি পতিত জমিতে চাষ হয়ে খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

দেশের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ১৪.৮৪ মিলিয়ন হেক্টর। তার মধ্যে ৩.৭৪ মিলিয়ন হেক্টর (মোট জমির ২৫ শতাংশ) কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার হয় না। এসব জমি শহরাঞ্চল, শিল্প ভবন, গ্রামীণ বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও অন্যান্য অবকাঠামোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।

যদিও ১৯৮৫ সালে যেখানে ৮.৮৫ মিলিয়ন হেক্টর চাষযোগ্য জমি ছিল, তা কমে ২০১১ সালে চাষযোগ্য জমি হয়েছে ৭.৮৪ মিলিয়ন হেক্টর। তবে, একই জমিতে বছরে দুবার, তিনবার, এমনকি চারবার ফসল হওয়ায় মোট উৎপাদনযোগ্য জমি বেড়ে ১৪.৯৫ মিলিয়ন হেক্টরে পৌঁছেছে।

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page