অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ বিশ্লেষণে দেশে মোট ৩১৪টি উপজেলা ও থানাকে সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ৫ বছরের ৩৭ হাজার সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।
এর মধ্যে ১৩৯টি অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা, ১৭৫টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা, এবং ২১টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ২১টি এলাকা হচ্ছে, ঢাকা: রাজধানী ঢাকা, ধামরাই, গাজীপুর: গাজীপুর সদর, কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, টাঙ্গাইল: কালিহাতী, মাদারীপুর: শিবচর, টেকেরহাট, ফরিদপুর: ভাঙ্গা, পাবনা: ঈশ্বরদী, বগুড়া: শেরপুর, নাটোর: বড়াইগ্রাম, চট্টগ্রাম: মিরেরসরাই, পটিয়া, সীতাকুন্ডু, কক্সবাজার: চকরিয়া, চুয়াডাঙ্গা: দামুড়হুদা, বরিশাল: গৌরনদী, হবিগঞ্জ: মাধবপুর, ময়মনসিংহ: ত্রিশাল, ভালুকা
অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ ১৩৯টি উপজেলা/থানা হচ্ছে, ঢাকা বিভাগ: রাজধানী, ধামরাই, সাভার, কেরানীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ সদর, সিঙ্গাইর, গাজীপুর সদর, টঙ্গী, কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, টাঙ্গাইলের কালিহাতী, মধুপুর, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ, বন্দর, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা, পলাশ, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, শরীয়তপুরের জাজিরা, ফরিদপুরের সদর ও ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, রাজবাড়ির সদর উপজেলা ইত্যাদি।
চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের উল্লেখযোগ্য উপজেলাগুলোর মধ্যেও বহু এলাকা এই তালিকায় রয়েছে, যেমন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, মিরেরসরাই, পটিয়া, বগুড়ার শেরপুর, নওগাঁর মান্দা, যশোরের অভয়নগর, খুলনার ডুমুরিয়া, বরিশালের গৌরনদী, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, হবিগঞ্জের মাধবপুর ইত্যাদি।
দুর্ঘটনাপ্রবণ ১৭৫টি উপজেলা/থানা হচ্ছে, এই তালিকায় রয়েছে দেশের প্রায় সব বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংলগ্ন উপজেলা। ঢাকা বিভাগের নবাবগঞ্জ, টাঙ্গাইলের বাসাইল ও সখীপুর, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, রাজবাড়ির পাংশা, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও সাতকানিয়া, কক্সবাজারের টেকনাফ, রাজশাহীর গোদাগাড়ি, নওগাঁর পত্নীতলা, খুলনার পাইকগাছা, যশোরের মনিরামপুর, রংপুরের বদরগঞ্জ, বরিশালের বাবুগঞ্জ, পটুয়াখালীর গলাচিপা, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনার কেন্দুয়া ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জসহ মোট ১৭৫টি এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত।
দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ
১️। সড়কের নকশা ও অবকাঠামোগত ত্রুটি
২। সড়ক নিরাপত্তা উপকরণের অভাব (সাইন, মার্কিং, বিভাজক ইত্যাদি)
৩️। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে জনবল ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা
৪️। একই সড়কে বিভিন্ন যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল
৫️। চালকদের দক্ষতার অভাব
৬️। সড়ক পার্শ্ববর্তী এলাকার জনবসতির অসচেতনতা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৩১৪ এলাকার বাইরেও দুর্ঘটনা ঘটছে, তবে তা নিয়মিত নয়। যেসব এলাকায় ধারাবাহিকভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে, সেগুলোকেই এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, দেশের সড়ক-মহাসড়ক উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যা ও গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকার পরিসরও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের উচিত একটি নিরাপদ ও টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে স্থানীয় কমিউনিটি ও বেসরকারি সংগঠনগুলোর সক্রিয় সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা।