April 13, 2025, 12:41 am
শিরোনামঃ
নড়াইলে লবণাক্ত পানির প্রভাবে চাষে ব্যাপক ক্ষতি মাগুরা জেনারেল হাসপাতালে জনবল সরবরাহের টেন্ডারে তুঘলকি কান্ড জনগণ বিচার বিভাগের ওপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে : প্রধান বিচারপতি বিচারক সংকট ও লজিস্টিক সমস্যার সমাধান করা হবে : আইন উপদেষ্টা তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রীর সাক্ষাৎ তদন্ত কার্যক্রম ও বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে : চিফ প্রসিকিউটর সারাদেশে মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী ও কন্যাশিশু নাটোরে ইসরায়েলবিরোধী মিছিলে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ২৮ বস্তা টাকা ; গণনায় নিয়োজিত ৪৫০ জন নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে ব্যবসা করুন : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি সরকারের সময় হাওয়া ভবনের দৌরাত্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন লাভের ব্যাপারে চিন্তা করেন, অথচ আগে তো একটা বড় অংশ হাওয়া হয়ে যেতো। এখন আর সেই হাওয়া হওয়ার ব্যবস্থাটা নাই। সেখান থেকে সবাইকে মুক্ত রেখেছি। সেটা মাথায় রেখে- দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ব্যবসা করুন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ গণভবনে দেশের ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এখানে কোন হাওয়া ভবন নেই, আর পিএমও-তে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে) কোন উন্নয়ন উইংও  নেই। যে হাওয়া ভবনে এক ভাগ দিতে হবে, উন্নয়ন ভবনে এক ভাগ দিতে হবে বা অমুক জায়গায় দিতে হবে। এই যন্ত্রণাতো আপনাদের ভুগতে হয় না এখন আর। এটাতো আপনারা নিশ্চয় শিকার করবেন। সেই যন্ত্রণা থেকে তো সবাই মুক্ত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ এ সরকার গঠনের পর আমাদের ব্যবসায়ীরা সে যে দলেরই হোক আমরা কিন্তু ওখানে দল বাছতে যাইনি। যে দলেরই হোক যাতে তারা ব্যবসাটা ব্যবসায়ী হিসেবে করতে পারে সেই পরিবেশটা সৃষ্টি করে দিয়েছি।
টানা তিনবারের সরকার প্রধান  শেখ হাসিনা বলেন, এই ১৪ বছর একটানা ধারাবাহিক ভাবে আপনারা লাভজনক ব্যবসাটা করে গেছেন, আমরা কিন্তু করোনার সময়ও সেটা মোকাবেলা করলাম। প্রণোদনা দিলাম, বিশেষ প্রণোদনা, আমার কাছে কেউ এসে দাবি করেননি। কেউ বলে নাই। কিন্তু, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার একটা টিম খুব ভালো কাজ করছিল- যে কোথায় কি করা যেতে পারে। আমার অর্থনীতির চাকাটাকে চলমান রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ, তাদের সমস্ত কর্মকা- বন্ধ। আমরা বলেছি আমরা এখানে বন্ধ হতে দেবো না। এখানে চালু করে রাখতে হবে। শ্রমিকদের বেতন, এই যে গার্মেন্টস, তার বেতন তো আমি দিয়ে দিলাম সব। প্রণোদনা প্যাকেজ করলাম, বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বিরোধী দল যখন একটু মাঠে নেমেছে তখন ব্যবসায়ী মহলে শংকার সৃষ্টি হয়েছে অথবা কারো কারো মনে আশার প্রদীপ জ¦লে উঠেছে। যদি আবার হাওয়া ভবন খুলতে পারে তাহলে কি সুবিধা পাবে বা জানি না কেন হঠাৎ দেখি এক একটা সুর তোলে- এটা নাই, ওটা নাই, এটা হবে না, ওটা হবে না। কিন্ত, বাংলাদেশে এখনও আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পেরেছি। যেখানে ইংল্যান্ডে ৪০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। তার ওপর বিশ^ব্যাপী গ্যাসের সমস্যা চলছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোকে সম্ভবত প্রথমবারের মতো তাদের মজুদ থেকে তেল ব্যবহার করতে হচ্ছে যেখানে যুক্তরাজ্য বিদ্যুতের দাম ৮০ শতাংশ বাড়িয়েছে এবং সমগ্র ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যসহ শীতপ্রবণ দেশগুলোকে শক্তিসঞ্চয়ে শীতকালীন পরিকল্পনা তৈরি করতে হচ্ছে।
সরকারের জ¦ালানি ক্ষেত্রে ব্যাপক ভর্তুকি প্রদানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের ব্যবসার জন্য এলএনজি কিনে নিয়ে এসেও সাপ্লাই দিচ্ছি। কিন্তু, যে টাকা দিয়ে আমরা কিনছি, যে খরচ পড়ছে তার চেয়ে খুব কম টাকায় আমরা দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে ৬০ টাকা পড়বে পার লিটার সেখানে আমরা ৯ টাকা পার লিটারেও সবাইকে এলএনজি সাপ্লাই দিয়েছি। কিন্তু, সমস্যাটা বাংলাদেশে নয়, এটা আন্তর্জাতিক সমস্যা, সেটা মাথায় রাখতে হবে। যেসব জায়গা থেকে আমরা সার, গম বা খাদ্য পণ্য আনি আজকে সব জায়গায় সমস্যা।’
এ বিষয়ে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্রাজিল থেকে সরাসরি সয়াবিন ও চিনি আমদানীতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং বেসরকারি খাতগুলো ও নিজেরা যে কোন সময় এখান থেকে পণ্য আমদানী করতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস সম্পর্কে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সময়কালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। কারণ, অবৈধ হুন্ডি প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে বেশিরভাগ রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো হয়েছিল এবং রিজার্ভ থেকে ব্যয়ও সেই সময়ে কম হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমদানি শুরু করার সাথে সাথে রেমিট্যান্স কমতে শুরু করেছে, তিনি যোগ করেন যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি করা হয়েছে এবং এগুলো কাজ শুরু করলে অবশ্যই রিটার্ন পাওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে কৃচ্ছতা সাধন ও সঞ্চয়ের পাশাপাশি সারাদেশে তেল ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মুহম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত তার উপলব্ধি থেকে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ আসতে পারে।
‘অনেকে মনে করেন, আমি কেন বলছি (আসন্ন দুর্ভিক্ষের কথা) এবং কিসের ভিত্তিতে। এটি আমার একটি উপলব্ধি যা দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আসা,’ তিনি বলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সমগ্র বৈশ্বিক অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিকে এর ক্ষয়ক্ষতি বহন করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি, ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যা আগেই বলেছি। এখন সকল (বিশ্ব নেতারা) একই কথা বলছেন।’
তিনি ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম বক্তৃতায় একটি বড় সংকট সম্পর্কে মন্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে তিনি যা কিছু বুঝতে পেরেছেন তা তিনি দেশবাসীকে বলেছেন, ‘তাদের (জনগণের) কাছে লুকানোর কিছু নেই। জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে এবং তারা আমাদের ভোট না দিলে আমরা ক্ষমতায় আসব না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশবাসীর কাছে বারবার আহ্বান জানিয়েছেন তাদের যেটুকু জমি আছে তাতে খাদ্য উৎপাদন করতে, যাতে দেশকে কখনই কোনো খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হতে না হয়।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তাঁর সর্বশেষ ভাষণ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং বর্তমান বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টিকারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্ব নেতাদের কাছে অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য ব্যয় করা অর্থ জনগণকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ও শিশুদের সুন্দর বিকাশের জন্য ব্যবহার করার এবং এমন একটি দেশকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যার জন্য বিশ্ববাসী চরমভাবে ভুগছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
‘আমার কী হবে তা আমি চিন্তা করি না। আমি যা সত্য তাই বলছি,’ বলেন তিনি ।
এ প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বারবার অনুরোধের পরও প্রতিবেশী দেশ ভারতকে গ্যাস দিতে অস্বীকার করায় ২০০১ সালে তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে ভাবতে বলেন, তিনি গ্যাস দিয়ে ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশকে এখন কী অবস্থার সম্মুখীন হতে হোত।

আজকের বাংলা তারিখ

April ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  


Our Like Page