এম এ কবীর / মোঃ ফাহিমুল ইসলাম : দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের ৪টি আসনের মধ্যে ৩টিতে নৌকা ও ১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে নৌকা প্রতীকের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ৯৫ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদন্দী ট্রাক প্রতীকের নজরুল ইসলাম দুলাল পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৭২৮ ভোট।
ঝিনাইদহ-২ (ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকুন্ডু) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদন্দী নৌকা প্রতীকের বর্তমান এমপি তাহজিব আলম সিদ্দিকী (সমি) পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ১৫২ ভোট।
ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাদপুর) আসনে মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) মোঃ সালাহ উদ্দীন মিয়াজী ৮৩ হাজার ১৫ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদন্দী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি শফিকুল আজম খান চঞ্চল পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৯০৯ ভোট, অর্থাৎ সালাহ উদ্দীন মিয়াজী ১৮ হাজার ১০৬ ভোট বেশী পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া জাতীয় পার্টি মনোনীত আব্দুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে ২ হাজার ১৫১ ভোট ও নৌকা প্রতীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানো যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের ঈগল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৫৯৪ টি।
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-ঝিনাইদহ সদরের আংশিক) আসনে নৌকা প্রতীকের বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার ৯৬ হাজার ৫০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদন্দী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আব্দুর রশিদ পেয়েছেন ৫৭ হাজার ১০০ ভোট।
তবে এবারের নির্বাচনে চমক দেখিয়েছেন ঝিনাইদহ-৩ আসনের সদ্য বিজয়ী মেজর জেনারেল (অবঃ) সালাহ উদ্দীন মিয়াজী, তিনি যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তানের পরিচয় দিয়েছেন।
সালাহ উদ্দীন মিয়াজী রাজনীতিতে নতুন হলেও তার পিতা এ আসনে ১৯৭০ সালের গণপরিষদ সদস্য ও ৭৩ সালের সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর মইনুদ্দীন মিয়াজীর বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করে সাধারণ ভোটারা সালাহ উদ্দীন মিয়াজীকে আপন করে বুকে টেনে নিয়েছেন।
মেজর জেনারেল (অবঃ) সালাহ উদ্দীন মিয়াজী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব ছিলেন। ২০১৭ সালে অবসর গ্রহণের পর তাকে নৌকার মাঝি হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়ে মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনীতিতে নতুন মুখ সালাহ উদ্দীন মিয়াজীকে বিজয়ী করা ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জের। তবে প্রার্থীর নিজের প্রচেষ্টা ও মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের রাত-দিনের প্রচেষ্টা, কোটচাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি ও কোটচাদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান সেলিম এবং ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর প্রচেষ্টা ইতিবাচক ফল বয়ে এনেছে।
ব্যাক্তিগত জীবনে অমায়িক স্বভাবের অধিকারী সালাহ উদ্দীন মিয়াজী এমপি পদে থাকা অবস্থায় ঝিনাইদহ-৩ আসনের মহেশপুর ও কোটচাদপুর উপজেলায় রাজনৈতিক চাঁদাবাজী, নিয়োগ বানিজ্য, টেন্ডারবাজী, বিল-বাওড় দখল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ হবেনা এবং এলাকার সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে একথা ভেবেই এলাকার ভোটারা তাকে ভোট দিয়েছেন।
Leave a Reply