21 May 2024, 03:08 am

দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষ হয়েছে। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ঘোষণা পাঠ করার মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার চলতি অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন।

এর আগে সংসদে ১৯৭২ সালের ৩০ এপ্রিল মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ভাষণের অডিও শুনানো হয়। ১৭ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের এই ভাষণটি বাংলাদেশ বেতার থেকে সংগ্রহ করা হয়।

গত ২ মে থেকে শুরু হওয়া এবারের অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ৬টি। এ অধিবেশনে ১টি বিল পাস হয়। ৬টি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ২৪২টি নোটিশ পাওয়া যায়। নোটিশগুলো থেকে ৬টি নোটিশ গৃহীত হয়েছে এবং গৃহীত নোটিশের মধ্যে ৪টি নোটিশ সংসদের বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দানের জন্য সর্বমোট ৩৮টি প্রশ্ন পাওয়া যায়, এর মধ্যে তিনি ১৫টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য প্রাপ্ত মোট ৯০২টি প্রশ্নের মধ্যে মন্ত্রীরা ৩৬৪টি প্রশ্নের জবাব দেন।

অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে স্পিকার বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রই একটি দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়- উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আশা করি, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, সংসদ কার্যকর থাকলেই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা সুসংহত হয়। সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সংসদে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে তারা সরকারকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দেওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য। আশা করি এ লক্ষ্যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নয়নের মত মৌলিক প্রশ্নে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা স্বীয় অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং সাহসী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ অব্যাহত উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সামিল হয়েছে। মেট্রোরেল,এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমানবিক চুল্লিসহ সারাদেশে অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন,মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস,নারীর ক্ষমতায়ন,শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। একটি কল্যাণকামী, উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। একাত্তরে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বতন্ত্র দেশ পেয়েছি, আর তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে চলেছি স্মার্ট বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ নারীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে যুক্ত করে উন্নয়ন কার্যক্রম অগ্রসর হচ্ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত না হলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সে কারণে তৃণমূল পর্যায়ে সুষম উন্নয়ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল ডিভাইড দূর করে তথ্য প্রযুক্তিগত স্মার্ট সমাজ ও অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করবে-অর্জিত হবে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি।

সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদানের জন্য স্পিকার সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীকে যিনি সার্বক্ষণিক সংসদ পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান করেছেন। তিনি সংসদ উপনেতা, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, চীফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ এবং সকল সংসদ সদস্যদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বিরোধী দলীয় নেতার প্রতিও সংসদ কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি ডেপুটি স্পিকার ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়া পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বাংলাদেশ বেতার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলসহ দেশের সকল গণমাধ্যমের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি স্পিকার আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শিরীন শারমিন চৌধুরী দেশ ও জাতির অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সকলের প্রতি সশ্রদ্ধ অভিবাদন ও আন্তরিক শুভকামনা জানিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 5071
  • Total Visits: 756475
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ মঙ্গলবার, ২১শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১২ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:০৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018