অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য উভয় পক্ষের আলোচকরা মিশরে যাওয়ার প্রাক্কালে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস রোববার ইসরাইলের সঙ্গে জিম্মি-বন্দী বিনিময় দ্রুত শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে ।
খবর বার্তাসংস্থা এএফপি’র।
মিশরসহ বেশ ক’টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, আলোচনাটি একটি টেকসই যুদ্ধবিরতি অর্জনের ‘প্রকৃত সুযোগ’।
হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, ‘যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ও মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি অনুসারে অবিলম্বে বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হামাস খুবই আগ্রহী।’
ইসরাইলি কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে যুদ্ধ বন্ধ এবং গাজায় বন্দীদের মুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রোডম্যাপের প্রতি হামাসের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পর এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মিশরে আলোচনার আগে গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রুবিও সিবিএসকে বলেন, ‘হামলার মাঝখানে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া যাবে না, তাই হামলা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এর মাঝখানে যুদ্ধ চলতে পারে না।’
আলোচকদের মিশরের শারম এল-শেখের রিসোর্টে জড়ো হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে কয়েক দিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, ইসরাইলি প্রতিনিধিদল সোমবার মিশরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। আলোচনাটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাসের হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে শুরু হতে যাচ্ছে।
কায়রো নিশ্চিত করেছে যে তারা ‘সমস্ত ইসরাইলি বন্দী ও ফিলিস্তিনি বন্দী বিনিময়ের স্থল পরিস্থিতি ও বিশদ বিবরণ’ নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানাবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন গ্রুপের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া। তিনি রোববার রাতে মিশরে পৌঁছাবেন।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আল-হাইয়ার দল ‘যুদ্ধবিরতি, দখলদার বাহিনী প্রত্যাহার ও বন্দী বিনিময়ের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।’
হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প শনিবার মিশরে দুজন দূত-তার জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফকে পাঠিয়েছেন।
গোষ্ঠীটি তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করবে উল্লেখ করে হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, ‘মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের সময়, হামাস জোর দিয়ে বলেছে, গাজা উপত্যকার সমস্ত এলাকায় সামরিক অভিযান বন্ধ করা, সমস্ত বিমান, গোয়েন্দা ও ড্রোন কার্যকলাপ বন্ধ করা ও গাজা সিটির ভেতর থেকে প্রত্যাহার করা ইসরাইলের জন্য অপরিহার্য।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সময় হামাস ২৫১ জন জিম্মিকে আটক করে, যাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো গাজায় রয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ২৫ জন মারা গেছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুসারে, জিম্মিদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য, ইসরাইল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দী ও যুদ্ধের সময় গাজা উপত্যকা থেকে গ্রেফতার হওয়া ১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বন্দীকে মুক্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।