অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নওগাঁর আত্রাইয়ে টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ আদায় করে বাইসাইকেল পেয়েছে ২০৮ শিশু-কিশোর।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের বিহারিপুর মসজিদের সামনে বাইসাইকেলগুলো বিতরণ করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খবিরুল ইসলাম। তার ব্যতিক্রম এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাইসাইকেলগুলো বিতরণ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শেষ হয় ১০ নভেম্বর। শুরুতে ৩৫০ শিশু-কিশোর অংশ নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ২০৮ জন চূড়ান্ত হয়। আজান হলে নির্ধারিত মসজিদে শিশু-কিশোররা নামাজে অংশ নিতো। জামাতের সহিত তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। প্রায় একমাস পর বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।
বিহারিপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু শাহিন বলেন, ছেলে ইসতিয়াক আহমেদ রোহান নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছেলের বয়স যখন পাঁচ বছর তখন থেকেই আমার সঙ্গে নামাজ পড়া শুরু করে। তাকে ফজরের নামাজের সময়ও সঙ্গে করে তাকে মসজিদে নিয়ে যেতাম। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ৪০ দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়ার যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেখানে ছেলে অংশ নিতে চায়নি। কারণ তার পড়াশোনার চাপ ছিল। বোঝানোর পর সে অংশ নেয়। যদিও ছেলে নিয়মিত নামাজ আদায় করতো। এরপরও অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে সাইকেল পেয়েছে। ছেলে খুবই খুশি।
একই গ্রামের শিক্ষক মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, ছেলে আশফিকুর রহমান সিহাবের বয়স প্রায় ১২ বছর। অষ্টম শ্রেণিতে উঠবে। বাড়ির পাশে মসজিদ হওয়ায় ছেলে নিয়মিত নাজাম পড়ে। তবে প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর তাকে নামাজ পড়ার জন্য ডাকতে হয়নি। বরং ছেলেই আমাকে মসজিদে ডেকে নিয়ে যায়। তার পড়াশোনার মানও বেড়েছে। ফজরের নামাজ পড়ে আসার পর পড়তে বসে। শুধু উপহারের জন্য না, ছেলে যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে এটাই চাওয়া।
পাঁচুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খবিরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে আটটি ওয়ার্ড। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মসজিদ বাছাই করা হয়েছিল। শুরুতে ৩৫০ শিশু-কিশোর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ায় অংশ নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ২০৮ জন চূড়ান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার ব্যক্তি উদ্যোগে এমন আয়োজন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম নির্বাচিত হতে পারলে আদর্শ সমাজ গড়তে এলাকা মাদকমুক্ত করা হবে। মাদকমুক্ত হতে হলে আল্লাহ ভীতি হতে হবে। এরই অংশ হিসেবে শিশু-কিশোরদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যাদের ভোরে আরামের ঘুম ত্যাগ করে জামাতে অংশ নিয়ে নামাজ আদায় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাদের নামাজ আদায়ের অভ্যাস যেন অব্যাহত থাকে। এলাকার উন্নয়নে আরও ব্যতিক্রম উদ্যোগ নেওয়া হবে।
Leave a Reply