অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন চলতি সপ্তাহে তার কিশোরী কন্যাকে বেইজিংয়ে নিয়ে এসেছেন। এটি তার কন্যার বিদেশে প্রথম সর্বজনীন উপস্থিতি। বিষয়টি জল্পনা বাড়িয়েছে যে, সে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রের পারিবারিক শাসনের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হতে পারে।
উত্তর কোরিয়া কখনো তার নাম বা বয়স প্রকাশ করেনি। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, মেয়েটির নাম ‘কিম জু এয়ে’।
পিয়ংইয়ং থেকে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে রাতারাতি যাতায়াত করা সাঁজোয়া ট্রেন থেকে নেমে আসার সময় মেয়েকে বাবার ঠিক পেছনে দেখা যায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে জাপানের আত্মসমর্পণের স্মরণে বুধবার চীনের বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, ‘এই মুহূর্তে, ‘জু এয়ে উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে সবার আগে আছেন। তিনি ব্যবহারিক প্রোটোকল অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন।’
ম্যাডেন বলেন, ‘এটিই প্রথমবার যেখানে সে কিম জং উনের সঙ্গে বাইরে গেছে। এমন অভিজ্ঞতা তার বাবা কিংবা প্রভাবশালী খালাও কখনো পাননি।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি নেতৃত্ব ও অন্যান্য অভিজাতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, কিম জং উন তার বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে কখনো বিদেশ ভ্রমণে গেছেন, এমন প্রমাণ নেই। তবে জং ইল ১৯৫০-এর দশকে তার বাবা উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর সঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন।
২০২২ সালে জু এয়ে-কে তার বাবার সঙ্গে একটি বিশাল আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সময় দেখানো হয়েছিল। এর আগে কিম জং উনের সন্তানদের সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ হয়নি। কিমের অন্যান্য সন্তানদের সম্পর্কেও খুব কমই জানা যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা জু এয়ে-কে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরসূরি বলে মনে করে। যদিও সে শেষ পর্যন্ত পুরুষ-শাসিত রাজবংশের শীর্ষে যেতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আনুমানিক ১৩ বছর বয়সী জু নিজ দেশে ক্রমবর্ধমানভাবে হাই-প্রোফাইল ইভেন্টগুলোতে যোগদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, মে মাসে রাশিয়ান দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে তার কূটনৈতিক আত্মপ্রকাশ।
স্টিমসন সেন্টারের আরেক গবেষক র্যাচেল মিনইয়ং লি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে তার (জু এয়ে) জনসমক্ষে উপস্থিতির পরিধি সামরিক-সম্পর্কিত স্থান থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইভেন্ট পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।’