02 May 2024, 08:35 am

নিজের পদোন্নতি আটকাতে মামলার আশ্রয় নিলেন সাতক্ষীরার খাদ্য কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  পদোন্নতিতে আপত্তি সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা অনিন্দ দাসের। তাই নিজের পদোন্নতি আটকাতে এবার মামলার আশ্রয় নিয়েছেন এই খাদ্য কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে মামলার বাদী করিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায়কে।

সেই মামলায় বিবাদী করা হয়েছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক খুলনা ও সাতক্ষীরা সদর ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা অনিন্দ দাস। খুলনার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আদালতে গত ৪ এপ্রিল মামলাটি দাখিল করা হয়। মামলায় পদোন্নতি প্রদানের আদেশ, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আদালত।

সাতক্ষীরার নকিপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা স্বপন রায় মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি উপ খাদ্য পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদের জন্য ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট পর্যন্ত বকেয়া বেতন ভাতা পাবেন। যেটা অনিন্দ কুমার দাস এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ের। স্বপন রায় তখন অনিন্দ দাসের সহকারী ছিলেন। এছাড়া খাদ্য পরিদর্শক থেকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অনিন্দ দাসের সরকারি বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ফরম (এসিআর) পরিপূর্ণ নেই। ২০১৭-২০ সালের এসিআর এর মধ্যে ৩ মাস ২২ দিনের এসিআর প্রেরণ করা হয়নি। সেকারণে তিনি পদোন্নতির অযোগ্য।

সাতক্ষীরা জেলা অফিসের টিসিএফ জাকির হোসেন জানান, সরকারি চাকরির এসিআর গোপনীয় নথি। এটি বাইরে আসার সুযোগ নেই। তবে সেই গোপনীয় নথি নকিপুর গুদাম কর্মকর্তা স্বপন রায় কীভাবে পেলেন সেটি এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্ত অনিন্দ দাস ইতোমধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই সাতক্ষীরা সদর গুদামের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। এছাড়া মামলার বিষয়ে কোনো নথিপত্র জেলা অফিসে আসেনি।

খাদ্য বিভাগের অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে খাদ্য বিভাগের দপ্তর ও তার অধীনস্থ এলএসডি সমূহের কর্মচারীদের বেতন ও ভাতাদিসহ সব সরকারি বিলের আয়ন ও ব্যয়ন কর্মকর্তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, পরিদর্শক নয়। বাদী মামলার অভিযোগে তৎকালীন খাদ্য পরিদর্শককে দায়ী করে দেওয়া মামলা সঠিক নয়। মূলত পদোন্নতি খর্ব করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই মামলার উৎপত্তি হয়েছে।

এসব ঘটনার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা অনিন্দ কুমার দাস বলেন, মামলার বিষয়ে আমি কথা বলতে চায় না। যিনি মামলা করেছেন তিনি বলতে পারবেন।

পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে যোগসাযোশ করে মামলা করিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমি কাউকে টাকা দিয়ে মামলা করাইনি। এটি সত্য নয়। আমার পদোন্নতি হয়েছে আমি সেখানে যোগদানও করেছি। তাহলে মামলা করালেন কেন? এ প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি তিনি।

এই গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ওসি এলএসডি থাকাকালীন সময়ে রেকর্ডপত্রে মিলার ও কৃষকের নাম দেখিয়ে বাজার থেকে নিম্নমানের ধান ও চাল ক্রয় করে গুদামজাত করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেন। খাদ্যমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য ও পোস্টিং বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরা সদরে যোগদানের পরই বিদেশ থেকে আমদানিকৃত চাল পরিবর্তন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে, এসব বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা স্বপন রায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই কর্মকর্তার ওএমএস ডিলার, মিলারদের কাছ থেকে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ছড়িয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2867
  • Total Visits: 685250
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1124

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ ইং
  • ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৮:৩৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018