অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। একইসঙ্গে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে হামাসের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও। এনিয়ে ইইউসহ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের বিভিদেশ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি পরোয়ানাকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ইইউ বলছে, তাদের ২৭টি দেশই আইসিসির আইন মানতে বাধ্য। ইতালির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের দেশে নেতানিয়াহু প্রবেশ করলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
নেদারল্যান্ড জানায়, তারা আইসিসির আইন মানতে বাধ্য। একই সুরে বেলজিয়ামের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউরোপের দেশগুলোর উচিত ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। এছাড়াও, যত চুক্তি আছে সব বাতিল করার আহ্বান জানায় দেশটি।
এর পাশাপাশি, গণহত্যার জন্য ইসরাইলের সব কর্মকর্তাকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানায় তুরস্ক। একইসঙ্গে আইসিসির আইনকে সম্মান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাক সব স্বাধীন দেশকে আইসিসির রায় মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাকচ করে দেয়া হয়েছে এই রায়। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর আইসিসির আর কোনো কিছু করার নেই। এছাড়া ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ‘বিপজ্জনক নজির’ স্থাপন করেছে আইসিসি।
অন্যদিকে ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেন, যেসব দেশ এই আইন মানবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সব দেশের রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চলতি বছরের ২০ মে ইসরাইলি নেতাদের পাশাপাশি হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে আইসিসির কাছে আবেদন জানানে এর প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান।
এরপর পরোয়ানা জারিতে বিলম্ব হওয়ায় বারবার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। প্রায় ছয় মাস পর বহুলকাঙ্ক্ষিত ইসরাইলি দুই নেতার বিরুদ্ধে সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস। হামাসের ওই হামলার অজুহাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক আগ্রাসনের নির্দেশ দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। সেই থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে
ইসরাইলি আগ্রাসন। যদিও চলতি মাসের শুরুর দিকে ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেন নেতানিয়াহু।
Leave a Reply