অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার একটি পুকুরে মিলেছে ১০টি রুপালি ইলিশ। প্রতিটি ইলিশের ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম করে। শনিবার (২৯ জুন) সকালে উপজেলার হরণী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের শরিয়তপুর সমাজের মসজিদের পুকুরে জাল ফেললে মাছগুলো ধরা পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, সকালে পুকুরে জাল দেওয়ার পরে ১০টি ইলিশ ধরা পড়ে। মাছগুলো ছোট তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই পুকুরে ৩০টির অধিক ইলিশ আছে। এটা মসজিদের পুকুর তাই সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে মাছগুলো বড় হলে ধরা হবে। আমাদের এদিক পুকুরের একেক টা ইলিশ আধাকেজির উপরে হয়।
মসজিদের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, এই পুকুরে ২০২৩ সালে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। আমরা ধারণা করছি তখন ইলিশের পোনা ঢুকে এবং আস্তে আস্তে বড় হয়। আমাদের এদিক প্রায় পুকুরেই ইলিশ পাওয়া যায়।
হরণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতার হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমি ইলিশ মাছগুলো পাওয়ার খবর পেয়েছি। মাছগুলো আবার পুকুরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, পুকুরে ইলিশ হয় বিষয়টি এমন নয়। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পুকুরটি যখন প্লাবিত হয়েছে, তখন ইলিশ প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া আলাদা কিছু এখানে নেই।
এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, জোয়ারের পানি পুকুরে প্রবেশ করলে তখন নোনা পানির সঙ্গে ইলিশও প্রবেশ করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে স্বাদু পানিতে ইলিশ মাছ কম বাড়লেও একটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি লাভজনক নয়। এ ছাড়া স্বাদু পানিতে ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ ঠিক থাকে না।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মুখ্য ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, হাতিয়ায় ইলিশ পাওয়া যায় এমন বেশ কয়েকটি পুকুরে আমি গিয়েছি। আমরা গবেষণা করছি কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে ইলিশ চাষ করা যায় মূলত জীব বৈচিত্র্যের পরিবর্তনের ফলে ইলিশ তার বাসস্থান পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। ফলে সে নিজেকে পুকুরে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।
Leave a Reply